এর আগে আজ নির্ভয়া মামলায় দোষী সাব্য়স্ত হওয়া চার অপরাধীকে আলাদা করে ফাঁসি দেওয়ার জন্য় কেন্দ্রের আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে হাইকোর্টের বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইত বলেন, ‘ওদের সবার মৃত্যু পরোয়ানা একসঙ্গে কার্যকর করা উচিত বলে আমার অভিমত। ওরা নানা ছল-ছুতোয় ফাঁসি কার্যকরে দেরি করানোর কৌশল নিয়েছে বলে জানিয়ে হাইকোর্ট দোষীদের আর সাতদিনের মধ্যে যাবতীয় আইনি সুরাহা পাওয়ার পর্ব শেষ করতে বলেছে। বিচারপতি বলেছেন, দোষীরা দেরি করিয়ে দেওয়ার ফিকির খুঁজছে। তাই সব দোষীকে সাতদিনের মধ্য়ে সমস্ত রকম আইনি প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে নির্দেশ দিচ্ছি। তারপর কর্তৃপক্ষ আইন মেনেই যা করার করবে বলে আদালতের আশা।’
আজ হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, একই অপরাধে দোষীদের সাজা পৃথক ভাবে কার্যকর করা যায় না। সবার মৃত্য়ু পরোয়ানা একইসঙ্গে কার্যকর করতে হবে। বিচারপতি কাইত আরও বলেন, ‘এ নিয়ে কোনও বিতর্কই নেই যে, অপরাধটা হাড় হিম করা, ভয়াবহ, নারকীয়। দেশের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।’
নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষী চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ওপর নিম্ন আদালতের স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্রের পিটিশনের প্রেক্ষিতে আজ এই আদেশ দেয় দিল্লি হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, ‘দোষীরা সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদকে ঢাল করছে, যাতে ওদের শেষ নিঃশ্বাস বেরনো পর্যন্ত সুরক্ষা মেলে। আমার এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই যে, সব দোষী ১৫০ দিনের বেশি কেটে যাওয়ার পর রিভিউ পিটিশন পেশ করবে বলে অপেক্ষা করে ছিল। এর কারণ ওরাই সবচেয়ে ভাল জানে। অক্ষয় ৯০০ দিনের বেশি দেরি করে তার রিভিউ পিটিশন দাখিল করে।’ দিল্লি প্রিজন রুলসের ৮৩৪ ও ৮৩৬ রুলসে মার্সি পিটিশন বা প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোর সংস্থান ছিল না বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি। শনিবার ও রবিবার বিশেষ শুনানির পর চার দোষীর ফাঁসি কার্যকর করায় স্থগিতেদশ চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্রের আবেদনের ওপর গত ২ ফেব্রুয়ারি রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি কাইত।
নিম্ন আদালত ৩১ জানুয়ারি ‘পরবর্তী আদেশ জারি হওয়া পর্যন্ত’ তিহাড় জেলে বন্দি নির্ভয়া মামলার চার দোষী মুকেশ কুমার সিংহ, পবন গুপ্তা, বিনয় কুমার শর্মা ও অক্ষয় কুমারের ফাঁসি স্থগিত রাখে। তাকেই চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্র ও দিল্লি সরকার।
হাইকোর্ট আজ ২০১৭-র মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট চার দোষীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার পর থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে না পারায় সরকার, অন্যান্য কর্তৃপক্ষের তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, ওরা সকলেই ২০১৭-র মে থেকে অপেক্ষা করে রয়েছে, ঘুমিয়ে ছিল।
যদিও কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ সংসদে বলেছেন, শীঘ্রই দোষীদের ফাঁসি হবে। আমরা অত্য়ন্ত কঠোর। মেয়েটি ন্যয়বিচার পাবে।