নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। অবিজেপি রাজ্যগুলির সঙ্গে বাজেটে বঞ্চনা হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সেই নিয়ে এবার সংসদে তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে তর্কে জড়ালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের। আর তাতেই বাজেট নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ তোলার 'স্পর্ধা' কী করে হয়, প্রশ্ন তোলেন নির্মলা। (Nirmala Sitharaman)
বুধবার রাজ্যসভায় বাজেট নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেখানে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তোলেন। সেই নিয়ে রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিরোধীরা। সেই আবহে নির্মলা বলেন, "উনি (খড়গে) বলছেন অনেক রাজ্যের নামই নেই বাজেটে। শুধু দুই রাজ্যের কথাই নাকি বলেছি আমি! কংগ্রেস দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল। অনেক বাজেট করেছে ওরা। তাই ওদের জানা উচিত যে, প্রত্যেক বাজেটে সব রাজ্যের নাম রাখা সম্ভব হয় না।"(Mausam Noor)
এর পর তৃণমূলের সাংসদরা যখন পুনরায় রাজ্যসভায় প্রবেশ করেন, সরাসরি তাঁদের নিশানা করেন নির্মলা। তিনি বলেন, "গতকাল তৃণমূল বাজেট নিয়ে প্রশ্ন তুলছিল। বলা হচ্ছে বাংলাকে কিছু দেওয়া হয়নি। আমাকেও তাহলে বলতে হয় যে, গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী যত প্রকল্প এনেছেন, তার একটিও চালু হয়নি পশ্চিমবঙ্গে। এর পরও আমাকে প্রশ্ন করার স্পর্ধা দেখান আপনারা?"
নির্মলার এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদরা। জিরো আওয়ারে বলতে উঠে দলের সাংসদ মৌসম নুর জানান, ইচ্ছাকৃত ভাবে বাংলার প্রাপ্য বকেয়া টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। মৌসম বলেন, "অর্থমন্ত্রী কোনও মহানুভূতা দেখাননি। বাংলাকে শূন্য দেওয়া হয়েছে। বন্যায় বিধ্বস্ত মালদার জন্য কিছু দেয়নি কেন্দ্র। প্রত্যেক বর্ষায় গঙ্গা, মহানন্দার জলে ভেসে যায় মালদা। এবছর পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। নদীগুলির পথ পরিবর্তন হয়েছে। গঙ্গা এবং ফুলহার নদীর মধ্যে মাত্র ৭০০ মিটারের ব্যবধান। দুই নদী মিশে গেলে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় নেমে আসবে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হবে। বিস্তীর্ণ এলাকা চলে যাবে তার গ্রাসে। জমি, বাড়ি, বাগান হাতছাড়া হবে। গৃহহীন হবেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।"
মৌসম জানিয়েছেন, জলসম্পদ মন্ত্রক এবং ফরাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার অনুরোধ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘমেয়াদি সমাধান বের করতে আর্জি জানিয়েছেন। UPA জমানায় একাধিক বার ওই অঞ্চলে ভূমিধস প্রতিরোধী এবং বাঁধরক্ষার কাজকর্ম হয়। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে ফরাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে, কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেনি তারা। কেন্দ্রীয় সরকারের অবিলম্বে সেই নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা উচিত বলে জানান মৌসম।