কলকাতা: কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে জোর তরজা। অবিজেপি রাজ্যগুলিকে বঞ্চিত রেখে নরেন্দ্র মোদির সরকার বিজেপি শাসিত এবং শরিক শাসিত রাজ্যগুলিকে ভরিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। আর তার জেরে ২৭ জুলাই দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের কোনও মুখ্যমন্ত্রী ওই বৈঠকে যোগ দেবেন না। DMK নেতা তথা তামিলনাড়ুর মুখ্য়মন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনও নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করছেন। কিন্তু তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। (Niti Aayog)


বৃহস্পতিবারই মমতা দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে সাক্ষাতের সময়ও চেয়েছে তাঁর সচিবালয়। দিল্লিতে মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন তিনি। সেখানে রাজ্যের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার আর্জি জানাবেন ফের। সুযোগ পেলে নীতি আয়োগের বৈঠকেও বক্তৃতা করবেন মমতা। তবে মমতা নীতি বৈঠকে যোগ দিলেও, তাঁর দলের সাংসদরা এদিন দিল্লিতে সংসদভবনের বাইরে I.N.D.I.A জোটের বিক্ষোভে শামিল হন। কেন্দ্রীয় বাজেটের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন মমতা নিজেও। (Budget 2024)


এখনও পর্যন্ত যা খবর মিলেছে, সেই অনুযায়ী, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াও নীতি আয়োগের বৈঠকে যাচ্ছেন না। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি এবং হিমাচল প্রদেশের সুখবিন্দর সিংহ সুখুও বৈঠকে থাকছেন না বলে খবর। সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছেন, কন্নড়দের কোনও কথাই শোনেনি কেন্দ্র। তাই নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেওয়া অর্থহীন। 


আরও পড়ুন: Union Budget 2024: শরিকেই শুধু কল্পতরু মোদি? বাজেটে বৈষম্যের অভিযোগ, সংসদের বাইরে বিক্ষোভ বিরোধীদের


সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছেন, কর্নাটকের যাবতীয় প্রয়োজন বাজেটে উপেক্ষা করে গিয়েছে কেন্দ্র। কৃষদের কোনও দাবিদাওয়া মানা হয়নি। একাধিক প্রকল্পে রাজ্য সরকারের প্রাপ্য বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকার উচ্চবাচ্য করছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। মেট্রো এবং পরিকাঠামো খাতে টাকা পাওয়ার কোনও আশা দেখতে পাচ্ছেন না বলে জানান। তাঁর অভিযোগ, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যের বাইরে কেন্দ্র আর কোনও রাজ্যের দিকে তাকায়নি।


স্ট্যালিনের দাবি, তামিলনাড়ুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কোনও ক্ষেত্রেই টাকা মেলেনি। বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে সরকার নিরুত্তাপ। রাজ্যের যে প্রাপ্য টাকা, সেই টাকাও কেন্দ্র আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্ট্যালিন। কেন্দ্রে NDA-র সরকার ধরে রাখতে শরিকদের শুধুমাত্র ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। 


স্ট্যালিন জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বাবদ ৩৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হিসেব পাঠানো হয় কেন্দ্রকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৭০ কোটি টাকাই দিয়েছে কেন্দ্র। অথচ বিহারের জন্য ১১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অন্য রাজ্যের মানুষের সঙ্গে কেন্দ্র অবিচার করছে বলে দাবি তাঁর। দীর্ঘ দিন ধরে এই একই দাবি করে আসছে বাংলায় ক্ষমতাসীন তৃণমূলও। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে লাগাতার সরব হয়েছে তারা।