নয়া দিল্লি: আদানিকাণ্ডের প্রভাব পড়েনি ভারতীয় অর্থনীতিতে। দেশজোড়া হইচইয়ের মধ্যেই আজ এই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এই নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। এই ইস্যুতে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবিতে সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা। যদিও বিজেপি এই দাবিতে আমল দিতে নারাজ।
মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট সামনে আসার পরেই ব্যাপক ধস নেমেছে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে। কেঁপে গিয়েছে দেশের অর্থনীতি। বিতর্কের আঁচে উত্তাল হচ্ছে সংসদ। বিরোধীরা একসুরে, হয় সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত না হলে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবি জানাচ্ছে।
কিন্তু মোদি সরকার, তাতে আমল দিতে নারাজ। উল্টে এই পরিস্থিতির প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়বে না বলে দাবি করে কার্যত আদানি গোষ্ঠীর হয়ে মাঠে নেমেছে মোদি সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, "এর আগে দেশে কত এফপিও ফেরত নেওয়া হয়েছে আর কত এফপিও ফেরত নেওয়ার জন্য দেশীয় অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়েছে? কোনও বড় সংস্থার শেয়ারের দাম পড়ে গেলে, গোটা দেশের ওপর তার প্রভাব পড়বে, এটা এখনই বলা মানে তাড়াহুড়ো করা।"
পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে ভারতীর ব্যাঙ্কে আদানি গোষ্ঠীর ঋণের পরিমাণ মোট ৮১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে SBI-তে আদানির ঋণের পরিমাণ মোট - ২১ হাজার কোটি টাকা। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে ঋণের পরিমাণ মোট - ৭ হাজার কোটি টাকা। আদানি গোষ্ঠীতে LIC-র লগ্নির পরিমাণ মোট - ৩৬ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন, প্যান হবে মূল পরিচয়পত্র, ব্যাঙ্কিংয়ের জন্য সুবিধা হবে, মন্তব্য চন্দ্রশেখর ঘোষের
এই প্রেক্ষাপটে আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে যখন উদ্বেগের ঝড় উঠেছে, তখন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব একে চায়ের কাপে তুফান তোলার মতো বিষয় বলে আখ্যা দিয়েছেন।
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ও সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ পাল্টা কটাক্ষ করে ট্যুইটারে লেখেন, আদানির বিষয়টিকে চায়ের কাপে ঝড় তোলার মতো বলে উড়িয়ে দিয়েছেন দায়িত্ববান এক আধিকারিক। অবশ্য বিষয়টিকে তিনি অন্তত ঝড় বলে মেনে নিয়েছেন! আর যে চায়ের কাপের কথা হচ্ছে, সেটা কিন্তু এলেবেলে কারও নয়, খোদ প্রধানমন্ত্রীর চায়ের কাপ। কোনও সাধারণ কাপ নয়।
একদিকে, যখন আদানি ইস্যুতে সংসদে আলোচনা এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠছে, তখন বিরোধীদের দিকে পাল্টা আঙুল তুলছেন মোদি সরকারের হেভিওয়েট মন্ত্রীরা।
এদিকে, ফোবর্সের তালিকা অনুযায়ী, এখন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় ১৭ নম্বরে আছেন গৌতম আদানি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আদানি গোষ্ঠীর প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ হারিয়েছে।