নাগপুর: প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে একসময় তাঁকে নিয়ে চর্চা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি সরকারের মন্ত্রী হয়েই রয়েছেন তিনি। চাইলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন কি না, ঘুরেফিরে আজও উঠে আসে এই প্রশ্ন। এবার নিজেই সেই নিয়ে মুখ খুললেন নিতিন গডকড়ী। জানালেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব এসেছিল তাঁর কাছে। তাঁকে সমর্থনের প্রস্তাবও দেন এক নেতা। কিন্তু নিজেই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও বাসনা তাঁর ছিল না বলে জানিয়েছেন নিতিন। (Nitin Gadkari)


সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে এই মন্তব্য করেন গডকড়ী। তিনি বলেন, "একটি ঘটনা মনে পড়ছে। কারও নাম করব না। তবে সেই ব্যক্তি বলেছিলেন, আপনি যদি প্রধানমন্ত্রী হন, আমরা আপনাকে সমর্থন করব। আমাকে কেন সমর্থন করবেন উনি, আমিই বা কেন ওঁর সমর্থন নিতে যাব, জানতে চেয়েছিলাম আমি। প্রধানমন্ত্রী হওয়া আমার জীবনের লক্ষ্য ছিল না। আমি নিজের আদর্শ এবং সংগঠনের প্রতি অনুগত। কোনও পদের জন্যই তার সঙ্গে আপস করব না। আমার কাছে নিজের আদর্শই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।" (Nitin Gadkari PM Post)


রাজনীতিতে নৈতিকতা অত্যন্ত জরুরি বলেও মন্তব্য করেন নিতিন। তিনি জানান, একবার বর্ষীয়ান CPI নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ ছিল তাঁর। ওই নেতাকে তিনি জানান, এবি বর্ধন নাগপুর এবং বিদর্ভ থেকে আসা সবচেয়ে উঁচুদরের নেতা। এতে CPI নেতা হতবাক হয়ে যান। রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সঙ্ঘের প্রতিপক্ষ নেতার প্রশংসা শুনে অবাক হন তিনি। 


নিতিনের কথায়, "আমার মতে, সততার সঙ্গে যদি কেউ বিরোধিতা করেন, তাঁকে সম্মান জানানো উচিত। বিরোধীদের মধ্যেও সততা রয়েছে। অসৎ ব্যক্তি সম্মানের অধিকারী নন।" কমরেড বর্ধন  নিজের আদর্শে অবিচল ছিলেন, রাজনীতি, সংবাদমাধ্যম সব ক্ষেত্রেই সততার সঙ্গে কাজ করেছেন বলে জানান নিতিন। 


তবে প্রধানমন্ত্রীর পদ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন নিতিন, তা সকলের নজর কেড়েছে। কারণ ২০১৯ এবং ২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে নিতিনের শামিল হওয়া নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়।  মোদির পর যোগ্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়েও নিতিন গড়কড়ীর নাম উঠে আসে একটি সমীক্ষায়। অমিত শাহ এবং যোগী আদিত্যনাথের পরই নাম ছিল তাঁর। যদিও ২০১৯ সালেই নিতিন জানিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়া তাঁর স্বপ্ন নয়।


২০১৩ সালেও বজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে গডকড়ীর নাম নিয়ে চর্চা শুরু হয়।  সেই সময় শোনা যায়, লালকৃষ্ণ আডবাণী যেনতেন প্রকারে নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়া আটকাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গডকড়ী সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বলে শোনা যায়। বিজেপি-র অন্দরে মোদি সমর্থক বা মোদি বিরোধী শিবিরের মধ্যে তিনি কোনও দ্বন্দ্ব চান না বলে জানান। শুধু আডবাণীই নন, সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতেরও অত্যন্ত বিশ্বলসস্ত নিতিন। ভাগবতের সঙ্গে মোদি-শাহের সম্পর্ক তেমন মধুর নয় বলে শোনা যায়।