নয়াদিল্লি: আলফা, ডেল্টার পর এবার ফের চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট। B.1.1.28.2 ধরনের একটি নয়া ভ্যারিয়ান্টের সন্ধান পেয়েছে পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি। ব্রাজিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরা যাত্রীদের সোয়াব নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। আর তাতেই মিলেছে এই নয়া ভ্যারিয়েন্টের হদিশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এর জন্য দায়ি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতোই এই B.1.1.28.2 ধরনের ভ্যারিয়েন্টটি। তবে নয়া এই ভ্য়ারিয়েন্টটি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, B.1.1.28.2 ভ্যারিয়েন্টটি আরও বেশি শক্তিশালী। এটি হ্যামস্টারের মধ্যে B.1 এর তুলনায় আরও বেশি মাত্রায় নিউমোনিয়া তৈরি করছে। তবে পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে আরও গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে বলেই উল্লেখ করা হয়েছে সমীক্ষায়।
সম্প্রতি Indian SARS COV2 Genomic Consortia ও National Centre for Disease Control-এর গবেষকরা জানিয়েছেন, ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মূল কারণ করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (B.1.617.2)।
এই দুই প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা বলছেন, করোনার প্রথম আলফা ভ্যারিয়েন্টের থেকে আরও মারাত্মক এই ডেল্টা স্ট্রেন। প্রথমে ব্রিটেনের কেন্টে পাওয়া গিয়েছিল করোনার এই আলফা ভ্যারিয়েন্ট। গবেষকদের মতে, আলফা ভ্যারিয়েন্টের থেকে ৫০শতাংশ বেশি সংক্রামক করোনার ডেল্টা স্ট্রেন।
এর আগেই করোনার এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিশ্বে। এ প্রসঙ্গে কথা বলেছে ব্রিটেনের পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড (PHE)। দেশের কোভিড ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা সবার সামনে এনেছেন তাঁরা। সেখানে বলা হয়েছে, প্রাথমিক প্রামাণ্য তথ্যের ভিত্তিতে আলফার থেকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে বেশি ক্ষতিকর মনে হয়েছে। PHE-র মতে, এই ভ্যারিয়েন্টের ফলে রোগীর হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত করে বলতে গেলে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
যদিও দেশের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে এখনও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। যাতে দেখা গিয়েছে, এই ভ্যারিয়েন্ট ছাড়াও দেশে ১২,২০০ করোনার ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে। যা স্বাভাবিকভাবেই ভারতের উদ্বেগের কারণ।
করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে সরকারি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দেশে সব রাজ্যেই রয়েছে কোভিডের এই ভ্যারিয়েন্ট। যদিও দিল্লি, অন্ধ্রপ্রদেশ , গুজরাত, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, তেলাঙ্গানায় মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করেছে এই ভাইরাস। পরিসংখ্যান বলছে, এইসব রাজ্যেই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সবথেকে বেশি ক্ষতি করেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, কোভিডের ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ হতে পারে। তবে আলফা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এখনও পর্যন্ত দেশে ২৯,০০০ কোভিড রোগীর জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের (ডিএনএ-র নিউক্লিওটাইডসের অবস্থান বোঝার পরীক্ষা) মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যাতে ৮৯০০টি নমুনায় B.1.617 পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ১০০০-এরও বেশি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। যা স্বাভাবিকভাবেই চিন্তা বাড়িয়েছে সরকারের।