নয়াদিল্লি: ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারতে এসে তবলিগি জামাতের ধর্মীয় কার্যকলাপে জড়িত থাকায় বর্তমানে  এদেশ সফররত ৯৬০ বিদেশিকে কালো তালিকাভুক্ত করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। গত মাসে তবলিগি জামাতের অনুষ্ঠান থেকে সারা দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে  অভিযোগ উঠেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার দেশগুলি থেকে একাধিক লোকজন সেখানে যোগ দিয়েছিল। এপর্যন্ত জামাতের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া সাড়ে ৫০০-র বেশি মানুষের শরীরে ওই ক্ষতিকর, প্রাণঘাতী ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া  গিয়েছে।


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক থেকে হিন্দিতে ট্যুইট করে বলা হয়েছে, পর্যটক ভিসায় ভারতে এসে তবলিগি জামাতের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ৯৬০ জন বিদেশিকে ব্ল্য়াকলিস্ট করে তাদের ভারতীয় ভিসাও বাতিল করা হয়েছে।

জনৈক সরকারি অফিসার সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ভিসা বাতিল করার পর এবার প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ করা হবে ওদের বিরুদ্ধে। ওদের যার যার দেশে ফেরত্ পাঠানো হবে। সব  কালো তালিকায় ফেলা  তবলিগ জামাত কর্মীর বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ ধারায় আইনি প্রক্রিয়া  শুরু হবে, ভিসার অপব্যবহারের দায়ে। ভারতে ট্যুরিস্ট ভিসায় আসা  বিদেশিদের ধর্মীয় কার্যকলাপে সামিল হওয়ার অনুমতি নেই। রাজ্যগুলিকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।

সরকার এও ঠিক করেছে, ভারত সফরে এসে তবলিগের কাজকর্মে যুক্ত হতে  চায়, এমন কোনও বিদেশিকেই ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়া হবে না।

আমেরিকা, ফ্রান্স ও ইতালি থেকে আসা ১৩০০-র বেশি বিদেশি তবলিগি জামাত কর্মীকে দেশের নানা প্রান্তে শনাক্ত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

জামাতের কাজকর্মে যোগ দেওয়া  কালো তালিকাভুক্ত বিদেশিদের ব্যাপারে জনৈক সরকারি কর্তা বলেন, এখনও পর্যন্ত ওরা কোয়ারেন্টিন কেন্দ্র বা হাসপাতালে আছে। চিকিৎসা সম্পূর্ণ হওয়ার পর তাদের যে যে রাজ্য়ে আছে, সেখানকার ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে, সেখান থেকেই আইনি প্রক্রিয়া চলবে।

কেন্দ্রীয়  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে যাবতীয় তথ্য, নথিপত্র বিদেশমন্ত্রককে পাঠানো হয়েছে যাতে ওই বিদেশিরা যে ৬৭টি দেশের লোক, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। প্রতিটি দেশ কীভাবে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেব, তার বিস্তারিত পদ্ধতি, প্রক্রিয়া তৈরি করছে বিদেশমন্ত্রক।

কোনও  বিদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠানোর ব্য়াপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গাইডলাইন হল, কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলে চার্টার্ড বিমানের বন্দোবস্ত করতে হবে। বিমানে তোলার আগে তার শরীরে কোভিড ১৯ এর উপসর্গ আছে কিনা, জানতে তার স্ক্রিনিং হবে। যাদের শরীরে উপসর্গ দেখা যাবে না, তাদেরই বিমানে ওঠার অনুমতি দেওয়া হবে, যার শরীরে উপসর্গ বহাল রয়েছে দেখা যাবে, তার ক্ষেত্র পরবর্তী চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে।