দেরাদুন: বাবা রামদেব দাবি করেছেন, পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের শ্বাসারি করোনিল কিটের ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি আয়ুষ মন্ত্রক, এবার তা গোটা দেশে পাওয়া যাবে। তিনি বলেছেন, করোনা রুখতে পতঞ্জলি ঠিক পথে এগিয়েছে। তাঁদের বার করা ওষুধের লাইসেন্সও তাঁদের কাছে রয়েছে বলে রামদেব দাবি করেছেন।


দেরাদুনে সাংবাদিক বৈঠক করেন যোগগুরু রামদেব। বলেন, এবার তাঁদের করোনা প্রতিরোধী শ্বাসারি করোনিল কিট দেশের সর্বত্র পাওয়া যাবে। তাঁদের ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সংক্রান্ত সব কাগজপত্র আয়ুষ মন্ত্রকে জমা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রক তাঁদের ওষুধকে স্বীকৃতি দিয়েছে, বলেছে, করোনা রুখতে তাঁরা ঠিক পথে এগোচ্ছেন। আয়ুষ মন্ত্রক অনুমোদিক উত্তরাখণ্ড সরকারের দফতর থেকে ওষুধের লাইসেন্স বার করেছেন তাঁরা। তবে আয়ুষ বলেছে, পতঞ্জলি কোভিড ম্যানেজমেন্টের কাজ করছে, চিকিৎসা বা ট্রিটমেন্ট শব্দটি ব্যবহার করেনি।

ওষুধে কোনও ধাতব পদার্থ নেই বলে রামদেব জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, করোনিল, শ্বাসারি, গুলঞ্চ, তুলসী, অশ্বগন্থা- কোনও কিছুর ওপরেই আর নিষেধাজ্ঞা নেই। ১ তারিখ থেকে তাঁদের শ্বাসারি করোনিল কিট গোটা দেশে পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য আয়ুষ মন্ত্রক ও কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি। রামদেবের বক্তব্য, ওষুধ মাফিয়া, চিরাচরিত ওষুধের বাজারে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলি পতঞ্জলির বদনাম করার চেষ্টা করছে। তাঁদের ছোট করার জন্য একাধিক এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে। তাঁর কথায়, পতঞ্জলির সহ প্রতিষ্ঠাতা আচার্য বালকৃষ্ণ ও তাঁদের বরিষ্ঠ বিজ্ঞানীরা নিঃস্বার্থভাবে দেশের সেবা করছেন। ভিত্তিহীন সমালোচনাকে গুরুত্ব দেন না তাঁরা, নিজেদের কাজ করে যাবেন।

তিনি আরও বলেছেন, আয়ুষ মন্ত্রক পতঞ্জলিকে তাদের দিব্য করোনিল ট্যাবলেট, দিব্য শ্বাসারিবটি এবং দিব্য অনুতালিয়া প্রস্তুত করা ও সরবরাহের অনুমতি দিয়েছে। পতঞ্জলির দিব্য ফার্মেসি দিব্য করোনিল ট্যাবলেট ও দিব্য শ্বাসারিবটির জন্য লাইসেন্স বার করেছে, আধুনিক গবেষণামত ওষুধ পরীক্ষা করে আশাপ্রদ ফল পেয়েছেন তাঁরা।

রামদেবের দাবি, তাঁরাই প্রাচীন ভারতীয় বৈদিক ও আধ্যাত্মিক পরম্পরার ধারক বাহক। দেশের কোটি কোটি মানুষকে বোঝাতে চান, কখনও কোনও মিথ্যে দাবি বা প্রচার করেননি তাঁরা। হরিদ্বারের পতঞ্জলি রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও জয়পুরের এনআইএমএস বিশ্ববিদ্যালয় করোনা পজিটিভ রোগীদের ওপর যৌথভাবে এই সব ওষুধ পরীক্ষা করেছে। ইন্সিটিউশনাল এথিক্স কমিটি এই পরীক্ষায় ছাড়পত্র দিয়েছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রিতেও নাম নথিবদ্ধ করা হয়েছে। ১৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে নারী পুরুষ নির্বিশেষে ৯৫ জন করোনা রোগীর ওপর তাঁরা পরীক্ষানিরীক্ষা চালান। এঁদের কয়েকজন অ্যাসিম্পটোম্যাটিক, কয়েকজনের শরীরে অল্প করোনার লক্ষণ  আবার কয়েকজনের মাঝারি। ৪৫ জনের ওপর তাঁদের ওষুধ পরীক্ষিত হয়, বাকি ৫০ জনকে দেওয়া হয় প্লাসেবো ফরমুলেশন। ২৩ জুন সর্বসমক্ষে জানানো হয়, তাঁরা তাঁদের ওষুধ পরীক্ষায় আশাপ্রদ সাফল্য পেয়েছেন।

রামদেব দাবি করেছেন, তাঁদের ওষুধ খাওয়া করোনা রোগীদের ৩ দিনের মধ্যে ৬৭ শতাংশ রোগের উপশম হয়েছে, ৭ দিন চিকিৎসার পর ১০০ শতাংশ রোগী সেরে উঠেছেন। অর্থাৎ ৪৫ জন রোগীই দেখা গিয়েছে, করোনা নেগেটিভ।