লখনৌ : প্রাথমিক স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং গবেষণার জন্য উত্তরপ্রদেশকে বেছে নিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের ইচ্ছার কথা অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরপ্রদেশ সরকারকে জানিয়েছিলেন। ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। নোবেলজয়ীর সঙ্গে এবিষয়ে আলোচনা চেয়েছিলেন তিনি।


মঙ্গলবার লখনৌয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত আলোচনা করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়।


গত বছর গোড়ার দিকে বাংলার তাঁতকে (Handloom) বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার কাজ শুরু করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhijit Binayak Banerjee)।  পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বেনীনগর গ্রামের উত্তর ও মধ্যপাড়ায়  বিভিন্ন তাঁতশিল্পীদের  পরিবারের  সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁদের কাজও দেখেন। হস্তচালিত তাঁতের  দুর্দশার কথা অভিজিৎ বিনায়ক  বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান গ্রামের  তাঁতশিল্পীরা (Handloom Artist) ।


অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'বাংলার ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পকে পৃথিবীর সামনে তুলে ধরতেই এই কাজ শুরু করেছি। বছর দুয়েক আগের কথা। ফ্রান্সের প্যারিসে একটি সম্মাননা অনুষ্ঠানে নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সংগঠনের তরফ থেকে বাংলার  তৈরি তাঁতবস্ত্রের জামা উপহার দিয়েছিল। উপহারের জামা পেয়ে অভিজিৎ বাবু এতটাই আপ্লুত হন যে জামার কাপড়ের  উৎপত্তিস্থলের  সুলুক সন্ধান  জানতে চায়। কর্তৃপক্ষের তরফে অভিজিৎ বাবুকে  জানানো হয় এই জামার কাপড় বাংলার কেতুগ্রামের বেনীনগর গ্রামে তৈরি করা। সেই কথা  শোনার পরই  অভিজিৎ বাবু  তাঁতকাপড় তৈরির কাজ দেখতে বেনীনগর গ্রামের  সুব্রত সিংহরায়ের বাড়ি আসেন। 


অভিজিতের নোবেল-জয়-


দারিদ্র দূরীকরণ নিয়ে কত কথাই তো শোনা যায়। প্রতিশ্রুতির বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু দারিদ্রকে না বুঝলে কী করে দারিদ্রকে দূর করবেন ? প্রশ্নকর্তা আর কেউ নন, তিনি অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী বাঙালি। ১৯৬১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ে জন্ম অভিজিতের। বাড়ি দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জে। বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের অর্থনীতির অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান। মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় সেন্টার ফর স্টাডিস ইন সোশাল সায়েন্সেস-এর শিক্ষক ছিলেন। মা-বাবা দু’জনেই অর্থনীতিবিদ, এমন আবহে বেড়ে ওঠা অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে অনেকের মতো জয়েন্ট কিম্বা আইআইটি এন্ট্রান্সের পথে হাঁটেননি তিনি। সাতের দশকের শেষদিকে সাউথ পয়েন্টের পড়া শেষ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে অর্থনীতি নিয়ে স্নাতক হন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই শুরু স্বপ্নের উড়ানের। কলকাতার সেই ছেলেই হন বিশ্বসেরা।