উত্তর কোরিয়া: খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী হলে, বিদেশি টিভি শো দেখলে ঠিকানা কনসেনট্রেশন ক্যাম্প, পান করতে হয় সহবন্দিদের দেহ পোড়ানো ছাই মেশানো জল, দাবি প্রাক্তন বন্দির
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ | 09 Oct 2020 02:53 PM (IST)
চোংরি জেল থেকে কিছুটা দূরে একটা তামার খনি, তার দূষিত জল মিশে যায় বন্দিদের পানীয় জলে। আবার বৃষ্টি হলে দেহ পোড়ানো ছাইও সেই নদীতে গিয়ে মেশে।
কলকাতা: আজব কারণে সাজা হয় উত্তর কোরিয়ায়। আপনি যদি খ্রিস্টান হন বা টিভিতে বিদেশি সিরিয়াল দেখেন, অথবা বিদেশে বিশেষত দক্ষিণ কোরিয়ায় কী হচ্ছে সে ব্যাপারে খোঁজখবর রাখেন, ধরা পড়লে জেল হবে আপনার। আর যদি দেশের একনায়ক কিম জং উনের ছবি দেওয়া খবরের কাগজকে কোনওভাবে যথেষ্ট সম্মান না করেন, তা হলে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তাঁর বাবা বা ঠাকুর্দার ছবি দেওয়া কাগজকে সম্মান না দেখালেও একই সাজা। উত্তর কোরিয়ার চোংরি জেলের কয়েকজন প্রাক্তন বন্দির বক্তব্য নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আমেরিকার একটি সংগঠন, হিউম্যান রাইটস ইন নর্থ কোরিয়া। তাদের রিপোর্ট বলছে, ওই প্রাক্তন বন্দিরা দাবি করেছেন, উত্তর কোরিয়ার জেলের পরিবেশ অসম্ভব অস্বাস্থ্যকর। মৃত বন্দিদের দেহ রেখে দেওয়া হয় একটি গুদামে, সেখানে তা পচতে থাকে, ইঁদুরে খুবলে খেয়ে যায়। তারপর সেই দেহ পুড়িয়ে ছাই দিয়ে সার তৈরি হয় সেখানে। এক বন্দি দাবি করেছেন, প্রতি সোমবার তাঁদের মড়া পোড়ানোর দিন। একটা বাড়ির মত জায়গা আছে, সেখানে মৃতদেহ ডাঁই করে রাখা হয়। তারপর দেওয়া হয় আগুন। গোটা এলাকা ভরে থাকে রক্ত আর পোড়া মাংসের গন্ধে। তারপর যাবতীয় ছাই সার তৈরির জন্য জমিয়ে রাখা হয় পাশেই। চোংরি জেল থেকে কিছুটা দূরে একটা তামার খনি, তার দৃষিত জল মিশে যায় বন্দিদের পানীয় জলে। আবার বৃষ্টি হলে দেহ পোড়ানো ছাইও সেই নদীতে গিয়ে মেশে। সেই জলেই চলে বন্দিদের স্নান, খাওয়া। তাঁরা আরও বলেছেন, বৃষ্টির দিন কাঠ ভিজে যায়, ফলে দেহ পোড়ানো আরও কঠিন হয়ে ওঠে। বেশিরভাগ দেহ থাকে আধপোড়া। হাঁটতে চলতে শরীরে ঠেকে দেহের টুকরো। একজন জানিয়েছেন, একবার তাঁর পায়ে পাঁচখানা আধপোড়া পায়ের আঙুল ঠেকেছিল। তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। রিপোর্টটি তৈরি করেছেন জোসেফ এস বারমুডেজ জুনিয়র ও আমান্ডা মোর্টয়েট ওহ। তাঁদের দাবি, উত্তর কোরিয়ার জেলবন্দিরা অকল্পনীয় অবস্থার মধ্যে দিয়ে কাটাচ্ছেন। কিম প্রশাসনকে এর জন্য জবাবদিহি করতেই হবে।