নয়াদিল্লি: পর পর তিন-তিনটি বিমান দুর্ঘটনা। দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডার পর এবার নরওয়েতে। এক বিমানবন্দর থেকে ওড়ার পর মাঝ আকাশে প্রথমে হাইড্রলিক ফেলিওর হয় বিমানটির। অন্য বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে গেলে রানওয়ে থেকে চাকা পিছলে সবুজ ঘাসে ঢাকা মাঠে নেমে যায় বিমান। (Norway Flight Skids Off Runway)


KLM Royal Dutch Airlines-এর একটি যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে নরওয়েতে। ওসলো বিমানবন্দর থেকে অ্যামস্টারডাম যাচ্ছিল Boeing 737-0800 প্যাসেঞ্জার বিমানটি।  কিন্তু উড়ানের কিছু ক্ষণ পরই মাঝ আকাশে হাইড্রলিক ফেলিওর দেখা দেয়। হাইড্রলিক চাপের মাধ্যমে বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার, ব্রেক, ফ্ল্যাপ এবং ফ্লাইট কন্ট্রোলকে সচল রাখা হয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটিতে সেই নিয়েই সমস্যা দেখা দেয়। (Plane Accident News)


স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সন্ধে ৬টা বেজে ৫৫ মিনিটে বিমানটি ওড়ে। এর কিছু ক্ষণ পরই তীব্র শব্দ শোনা যায়। পাইলটরা দেখেন, বাঁ দিকের ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বিমান চালাতেও সমস্যা হচ্ছিল। তাই মুখ ঘুরিয়ে অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন পাইলটরা। কিন্তু রানওয়ে ছোঁয়ার পর সেখানেও চাকা পিছলে যায় বিমানের। রানওয়ে থেকে পাসের ঘাসে ঢাকা মাঠে নেমে যায় বিমানটি, যা বিমানবন্দরের ট্যাক্সিওয়ের অংশ। 



ওই বিমানে সওয়ার ছিলেন সাইক্লিস্ট অ্যান্বার ক্রাক। তিনি জানিয়েছেন, ককপিট থেকে তাঁদের যা জানানো হয়, তাতে টায়ার ফেটে গিয়েছে বলেই ইঙ্গিত মেলে। হাইড্রলিক প্রযুক্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে বোঝা যায়। ঘন কুয়াশা ছিল ওসলোতে। তাই অন্য বিমানবন্দরে নামার সিদ্ধান্ত নেন পাইলটরা।
মাঝ আকাশে সমস্যা পড়ে মুখ ঘুরিয়ে ওসলো থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরের সান্দেফিয়র্ড বিমানবন্দরে বিমানটি নামানোর সিদ্ধান্ত নেন পাইলটরা।


স্থানীয় সময় সন্ধে ৭টা বেজে ১৪ মিনিটে এই ঘটনা ঘটে। সান্দেফিয়র্ড বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে বিমানটি। সেই সময় বিমানে সওয়ার ছিলেন ১৮২ জন যাত্রী। নিরাপদে রানওয়ে ছুঁলেও, তার পরই নিয়ন্ত্রণ হারায়।


মার্টিন ফ্রাঙ্ক নামের আর এক যাত্রী জানিয়েছেন, তিনি সামনের দিকে বসেছিলেন। আচমকা প্রচণ্ড জোরে শব্দ হয়। মনে হয় কিছু আঘাত করেছে সজোরে। তবে পাইলটরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন, সকলকে শান্ত করেন বলে জানিয়েছেন মার্টিন। রানওয়ে ছেড়ে মাঠে নেমে যাওয়ার পরও বিমানের যাত্রীরা যে রক্ষা পেয়েছেন, তার জন্য পাইলটদেরই ধন্যবাদ জানান সকলে। 


কিন্তু এর পর হেনস্থার শিকারও হতে হয় বিমানযাত্রীদের। গন্তব্যে পৌঁছতে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের। বিভ্রান্তি ছড়ায় পরবর্তী উড়ান নিয়ে। দেরি হয়ে যায় অনেক। ফের ব্যাগপত্র তুলতে হয়, অনেককে হোটেলও বাতিল করতে হয়। সেখান থেকে বাড়িও ফিরে যান অনেকে। 


অন্য দিকে, রবিবার আরও দু'টি বিমান দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় Jeju Air-এর একটি বিমান ভেঙে পড়ে বিমানবন্দরেই। রানওয়ে থেকে বিপথগামী হয়ে দেওয়ালে ধাক্কা মারে। ১৮১ জন যাত্রীর মধ্যে ১৯৭ যাত্রীই মারা গিয়েছেন। অন্য দিকে, কানাডাতেও অবতরণের সময় রানওয়েতে কাত হয়ে যায় একটি বিমান। আগুন লেগে যায় বিমানের ডানায়। সেখান থেকে যদিও কোনও হতাহতের খবর আসেনি।