নয়াদিল্লি: গোয়েন্দাদের তরফে বার বার সতর্ক করা হলেও, আগে থেকে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, প্রশ্ন উঠছেই। সেই আবহেই গত পাঁচ দিনে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইন যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে চলেছে (Israel-Palestine Conflict)। কিন্তু শুধু হামাস নয়, ত্রিমুখী হামলা প্রতিহত করতে এই মুহূর্তে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে ইজরায়েল সরকার। কারণ প্যালেস্তাইন থেকে শুধুমাত্র হামাস নয়, লেবানন এবং সিরিয়া থেকেও লেবাননের উপর হামলা নেমে আসছে। (Israel-Palestine War)


ইজরায়েল বনাম হামাস


শনিবার ২০ মিনিটে ৫০০০ রকেট ছোড়ার পর গত পাঁচ দিনে লাগাতার ইজরায়েলের উপর রকেট নিক্ষেপ করে চলেছে হামাস। পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েলও। মঙ্গলবার গভীর রাতে বিমান থেকে বোমা ফেলে কার্যত গাজাকে ছারখার করে ফেলেছে তারা। কিন্তু হামাসের অতর্কিত হামলা সামাল দিতে রীতিমতো যুঝতে হচ্ছে ইজরায়েলকে। দু'পক্ষের মধ্যে রকেট, বোমা, গোলাগুলি বিনিময় চলছেই। তাতে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। তবে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো দেশ ইজরায়েলের সমর্থনে এগিয়ে এলেও, প্যালেস্তাইন এবং গাজার সমর্থনে এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে ইরান, সিরিয়ার মতো দেশকেও। এমনিতে শিয়াপন্থী হামাসের সঙ্গে ইরান, সিরিয়া এবং লেবাননের হেজবোল্লা সংগঠনের আঞ্চলিক সমঝোতা রয়েছে। পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকা-সহ পশ্চিম দেশগুিল এবং ইজরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তারা। 


ইজরায়েল বনাম লেবানন


শনিবার ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ে হামাস। এর পর দিনই তাদের সমর্থনে এগিয়ে আসে লেবাননের হেজবোল্লা সংগঠন। ইজরায়েলি সেনার সাঁজোয়া বাহিনী লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এর পাল্টা ইজরায়েলি সেনাও মর্টার ছুড়তে শুরু করে। ২০০৬ সালের পর থেকে হেজবোল্লা এবং ইজরায়েলি সেনার মধ্যে এত তীব্র পরিস্থিতি আগে লক্ষ্য করা যায়নি। বুধবারই দক্ষিণ লেবাননে রকেট ছুড়েছে ইজরায়েল। ১৯৮২ সালে ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড হেজবোল্লা সংগঠনের প্রতিষ্ঠা করে। ইজরায়েলি বাহিনী লেবাননকে আক্রমণের করলে, ইসলামি বিপ্লবকে আরব দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিতেই হেজবোল্লা গড়ে তোলা হয়। হেজবোল্লার দাবি, তাদের অস্ত্রভাণ্ডার কী বিপুল, সে ব্যাপারে কোনও ধারণাই নেই ইজরায়েলের। 


আরও পড়ুন: Israel-Palestine War: মুহূর্তের মধ্যে ছারখার করে দিতে পারে চারিদিক, রাতের অন্ধকারে গাজায় পড়ল ফসফরাস বোমা!


ইজরায়েল বনাম সিরিয়া


সিরিয়ার মোকাবিলা করতে গিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে ইজরায়েলকে। সিরিয়া সীমান্তে মোতায়েন থাকা কামান থেকে ছোড়া হচ্ছে ইজরায়েলে। ইজরায়েলি বাহিনীর তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, 'আমাদের বাহিনী গোলা এবং মর্টার শেলের জবাব দিচ্ছে। সিরিয়া থেকে যে হামলা হচ্ছে, তা প্রতিহত করছি আমরা'। সিরিয়া থেকে একাধিক গোলাগুলি উড়ে এসেছে বলে জানিয়েছে ইজরায়েলি সেনা। সিরিয়ার সঙ্গেও ইজরায়েলের সঁঘাতের ইতিহাস দীর্ঘ। ১৯৬৭ সালে ছ'দিনের যুদ্ধে সিরিয়ার হাত থেকে গোলান হাইটসের দখল কেড়ে নেয় ইজরায়েল। ১৯৮১ সালে নিজেদের ভূখণ্ডের সঙ্গে গোলান ভূখণ্ডকে জুড়ে নেয় তারা। যদিও গোলান হাইটসকে ইজরায়েলি ভূখণ্ডের অংশ বলে স্বীকৃতি দেয়নি রাষ্ট্রপুঞ্জ।


এই পরিস্থিতিতে ত্রিমুখী আক্রমণ সামাল দেওয়াই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইজরায়েলের সামনে। মাত্র পাঁচ দিন হল যুদ্ধের, তাতেই প্রাণহানি, ক্ষয়ক্ষতি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে আন্তর্জাতিক মহলও। বিগত কয়েক দশকে এত রক্তক্ষয় চোখে পড়েনি বলেও দাবি করছেন কূটনৈতিক মহল।