ওয়াশিংটন: করোনাভাইরাস কাড়ল বিশ্বখ্যাত শেফ ফ্লয়েড কার্ডোজের প্রাণ। নিউ জার্সিতে তিনি ৫৯ বছর বয়সে মারা গিয়েছেন। কার্ডোজ যে হাঙ্গার ইন্ক, হসপিট্যালিটির  কুলিনারি ডিরেক্টর ছিলেন, তারা বিবৃতি দিয়ে বলেছে, গভীর বেদনার সঙ্গে শেফ ফ্লয়েড কার্ডোজের চলে যাওয়ার খবর দিচ্ছি আমরা। গত ১৮ মার্চ নমুনা পরীক্ষায় কোভিড-১৯ সংক্রমণে অর্থাত করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা  পড়েছিলেন তিনি। তাঁর চিকিৎসা চলছিল নিউ জার্সির মাউন্টেনসাইড মেডিকেল সেন্টারে। জ্বর জ্বর বোধ করায় ১৭ মার্চ নিজেই হাসপাতালে ভর্তি  হন।
মা, স্ত্রী, দুই পুত্র বর্তমান তাঁর। মুম্বইয়ে বড় হওয়া। কার্ডোজ নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে ছিলেন সুইৎজারল্যান্ডের লেস রোচেস কুলিনারি স্কুলে।  ১৯৯৮ –এ ড্যানি মেয়েরের সঙ্গে তিনি ভারতীয় রেস্তোরাঁ খোলেন, যা বিপুল জনপ্রিয় হয়। সেখানে কার্ডোজ ছিলেন এক্সিকিউটিভ শেফ। অজস্র প্রশংসা, নানা স্বীকৃতির মুকুট পান তিনি। পরে মেয়েরের নর্থ এন্ড গ্রিলের সাফল্যেও হাত লাগান। পাশাপাশি নিজে ব্র্যাভোর ‘টপ শেফ মাস্টার্স’ এর তৃতীয় সিজনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে  সেরার শিরোপা পান। পরে নিউ ইয়র্ক শহরে পাওলো ওয়ালা খোলেন, পরে তৈরি করেন বম্বে ব্রেডও, যা গত বছর বন্ধ হয়ে যায়। মুম্বইয়েও ছিল তাঁর  রেস্তোরাঁ। বম্বে ক্যান্টিন, ও পেড্রো ও বম্বে সুইট শপ।
ভারত থেকে সম্প্রতি ফিরেছিলেন তিনি। ‘আগলি ডিলিশাস’ নেটফ্লিক্স সিরিজের ফিল্ম করছিলেন অভিনেতা আজিজ আনসারির সঙ্গে। ইনস্টাগ্রামে সেলফি পোস্ট করেছিলেন।
বম্বে ক্যান্টিনও ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানায়, হাঙ্গার, ইঙ্ক-এর কুলিনার ডিরেক্টর শেফ ফ্লয়েড কার্ডোজ ভাইরাল জ্বর নিয়ে  নিউইয়র্কে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি মুম্বইয়ে ছিলেন। ৮ মার্চ শহর ছাড়েন ফ্রাঙ্কফুট  হয়ে নিউ ইয়র্ক যাবেন বলে।  তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর নজর রাখা হচ্ছে। ওনার দ্রুত আরোগ্য প্রার্থনা করি।
কীভাবে শেফ হলেন, তা ২০১৭-য় সিবিএস-কে দেওয়া ইন্টারভিউয়ে জানিয়েছিলেন কার্ডোজ। বলেছিলেন, হতে চেয়েছিলাম বায়োকেমিস্ট।  একবার আর্থার হেইলির ‘হোটেল’ পড়ি।  এত মজা আছে  না। খাবারকে ভালবেসেই বড় হয়েছি।  তারপর একদিন নিজেই রান্নায় নেমে পড়লাম,  সত্যিই রান্নার হাত আমার  ভালই ছিল। দুটো রান্নার বইও লেখেন। ওয়ান স্পাইস-আমেরিকান ফুড, ইন্ডিয়ান ফ্লেভার্স (২০০৬), ফ্লয়েড কার্ডোজ-ফ্লেভারওয়ালা-বিগ ফ্লেভার। বোল্ড স্পাইসেস-এ নিউ ওয়ে টু কুক দি ফুডস ইউ লাভ (২০১৬)।
গভীর শোক প্রকাশ করে টিভি শেফ মধুর জেফ্রে বলেছেন, আমি স্তম্ভিত, শোকাবিষ্ট। ওনার এত বড় বড় নতুন নতুন কিছু করার বাসনা ছিল। নতুন সৃষ্টির লোক ছিলেন। একটা চমৎকার কেরিয়ারের মাঝপথে জীবন থেকে বিদায় নেওয়া সত্যিই হৃদয়বিদারক। রসনা দুনিয়ার আরও অনেকেই গভীর বেদনা, শোক প্রকাশ করেছেন কার্ডোজের জীবনাবসানে।