নয়াদিল্লি: পশ্চিম এশিয়ায় এবার মুখোমুখি দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্র। গাজা এবং লেবাননে লাগাতার আক্রমণের জেরে গত ১ অক্টোবর ইজরায়েলকে রক্ষ্য করে রকেট ছুড়েছিল ইরান। শনিবার সেই হামলার জবাব দিল ইজরায়েলও। ইরানের সামরিক শিবির লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু হামলা চালাল তারা। আত্মরক্ষার্থে এই হামলা বলে দাবি করেছে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF). এই মুহূর্তে ইরানের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আন্তর্জাতিক মহল। (Israel Attacks Iran)
মোট তিন দফায় ইরানে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। তারা এই অভিযানের নাম রাখে Operation days of Repentance. যুদ্ধবিমান F-35, F-151 এবং F-161 ব্যবহার করে ইরানে হামলা চালানো হয়েছে। দীর্ঘ পাল্লার ওই যুদ্ধবিমান থেকে প্রায় ২০০০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বোমা বর্ষণ করেছে ইজরায়েল। দীর্ঘ পাল্লার আকাশ থেকে ভূমিতে আঘাত হানার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে মূলত ইরানের সামরিক শিবিরগুলিকে নিশানা করা হয়েছে। (Iran-Israel Conflict)
এখনও পর্যন্ত যা খবর, সেই অনুযায়ী, ইরানের সামরিক শিবিরগুলিতেই মূলত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। সংঘাত যাতে বিরাট আকার ধারণ না করে, তার জন্য ইরানের পরমাণু কেন্দ্র, তেলের ঘাঁটিগুলি এড়িয়ে গিয়েছে ইজরায়েল। সবমিলিয়ে ১০০টি যুদ্ধবিমান থেকে রকেট নিক্ষেপ করা হয়। তিনটি ধাপে ইরানের ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন শিবিরে হামলা চলেছে। হামলা চালানো হয় ইরানের বায়ুসেনার শিবিরেও। 🇮🇷 IRANIAN attack on ISRAEL
VS
🇮🇱 ISRAELI attack on IRAN pic.twitter.com/bhgc3ycrx3
— Legitimate Targets (@LegitTargets) October 26, 2024
তিন দফায় ২৫-৩০টি করে যুদ্ধবিমান নামায় ইজরায়েল। ১০টি যুদ্ধবিমান থেকে লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করা হয়। বাকি যুদ্ধবিমানগুলির কিছু আক্রমণকারী যুদ্ধবিমানগুলিকে রক্ষা করছিল এবং ইরানকে ঠেকাচ্ছিল। ইরানের তরফ থেকে পাল্টা আক্রমণ প্রতিহত করতে প্রস্তুত ছিল ইজরায়েল এবং আমেরিকার বায়ুসেনাও। IDF মুখপাত্র ড্যানিয়েল হেগারি জানিয়েছেন, আত্মরক্ষার্থেই ইরানকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি, ইজরায়েলি নাগরিকদের সজাগ এবং সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি।
ইরান জানিয়েছে, ইজরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে বটে। কিন্তু তারা সফল ভাবে তা প্রতিহত করেছে। ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়ইনি। দেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তেহরান সংলগ্ন সেনশিবিরগুলি থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। রাত ২টো নাগাদ করাজের কাছেও বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথম দফায় পর পর ১১টি বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইজরায়েলকে এর জবাব দেওয়া হবে, ইরানের তরফে এমন বার্তাও উঠে এসেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। তবে সরকারি ভাবে ফের ইজরায়েলে হামলা চালানোর কোনও ঘোষণা করেনি তেহরান।
ইরানে এই হামলার পর ইজরায়েলের তীব্র নিন্দা করেছে সৌদি আরব। এভাবে চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি, পশ্চিম এশিয়ার মানুষেক জীবনে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে বলে মত তাদের। সব পক্ষকে সংযত থাকতে আর্জি জানিয়েছে তারা। মালয়েশিয়াও ইজরায়েলের নিন্দা করেছে। আমেরিকার হোয়াইট হাউসের তরফে বলা হয়, সরাসরি সংঘাতে যাওয়া উচিত নয় দুই দেশেরই। পাশাপাশি, ইরান যদি ফের ইজরায়েলে হামলা চালায়, তার ফল ভাল হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে জো বাইডেনের সরকার। তবে এই হামলায় তাদের কোনও ভূমিকা নেই বলে দাবি করেছে আমেরিকা।