কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরে রাজ্য রাজনীতির যাবতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বিদ্রোহী শুভেন্দু অধিকারী অপেক্ষায় ইতি টেনে শেষ পর্যন্ত শনিবার বিজেপিতে যোগ দিলেন। একা নয়, শাসকদলের একঝাঁক বিধায়ক-সাংসদও তাঁর সঙ্গেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা প্রাক্তন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সামনে গেরুয়া শিবিরে গেলেন। বিরোধী বাম শিবির ও কংগ্রেস থেকেও যথাক্রমে ২ ও ১ জন বিধায়ক নাম লেখালেন পদ্ম শিবিরে। প্রত্যাশামতোই নাম না করে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ‘ভাইপো হঠাও’ স্লোগান তোলার পাশাপাশি ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন শুভেন্দু।
তবে চুপ করে বসে নেই তৃণমূলও। ২ বারের সাংসদ, ২ বারের বিধায়ক, ৩টি দফতরের মন্ত্রী, দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর শুভেন্দুর আক্রমণের জবাব দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্যায়, সুব্রত বক্সীরা। সম্প্রতি মেদিনীপুরের এই কলেজ মাঠে দাঁড়িয়েই নাম না করে শুভেন্দুর উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার জবাব ফিরিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। মমতা বলেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস আমরা যখন তৈরি করেছিলাম, আমার মনে আছে অখিল গিরি প্রথমবার লড়াই করেছিল, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির ওই আসন থেকে, আমার মনে আছে, সেদিন আমরা হয়তো জিততে পারিনি। কিন্তু আমরা দ্বিতীয় হয়ে গিয়েছিলাম। মাত্র ২২ দিনের জায়গায়। সুতরাং এটা মনে রাখবেন, তৃণমূল কংগ্রেস অত দুর্বল নয়। পাল্টা শুভেন্দু আজ বলেছেন, দিনকয়েক আগে এই মাঠে তৃণমূলনেত্রী বলে গিয়েছেন যে কাঁথিতে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। অধিকারীদের মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। এবারও দ্বিতীয় হবেন। প্রথম হবে ভারতীয় জনতা পার্টি।
শনিবার শুভেন্দু যখন মেদিনীপুরে বিজেপিতে যোগ দিতে যাচ্ছেন, তখন কাঁথির শান্তিকুঞ্জের বাড়িতেই ছিলেন বাবা শিশির ও দুই ভাই দিব্যেন্দু-সৌম্যেন্দু। তমলুকের সাংসদ তথা শুভেন্দুর ভাইয়ের দাবি, তাঁদের তৃণমূল ছাড়ার কোনও প্রশ্নই নেই। এরই মধ্যে বুধবার শুভেন্দুর গড় কাঁথিতে সভা করতে চলেছেন ফিরহাদ হাকিম-সৌগত রায়। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী কিংবা তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু হাজির থাকেন কি না, সেটাও দেখার। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল কী বার্তা দেয়, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। এদিকে দলবদলের পর নিজের অবস্থানও স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন শুভেন্দু। বুঝিয়ে দিয়েছেন, দু’দশক তৃণমূলে কাটানোর পর এখন গেরুয়া শিবিরের হয়ে গলা ফাটাতে তাঁর কোনও অসুবিধা নেই। বলেন, তৃণমূলের এক পুরনো বন্ধু আমায় ভিডিও ক্লিপিংস পাঠাল, যাতে আমি বলছি বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও। তাঁকে আমি বললাম আমি যা বলি, নিষ্ঠার সাথে বলি। আজ মেদিনীপুরে গিয়ে বলব...তৃণমূল হঠাও দেশ বাঁচাও!