আজ তাঁকে যারা বিশ্বাসঘাতক বলছে, তারা ১৯৯৮ সালে তৃণমূল প্রতিষ্ঠার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর আশীর্বাদ ছাড়া বাড়ি থেকে বার হতে পারত না। তৃণমূল তখন এনডিএ সহযোগী ছিল। রাহুল সিনহা পুরনো লোক, তিনি বলতে পারবেন, আগেও একাধিকবার বিজেপির হাত ধরেছে তৃণমূল। ৯৯-তে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। নীতীশ সেনগুপ্ত ছিলেন এনডিএ প্রার্থী, কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র থেকে তাঁকে জিতিয়ে আনানোয় তাঁদের কোনও ভূমিকা ছিল না? প্রশ্ন করলেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু বলেন, কদিন আগে তৃণমূলনেত্রী বলেছেন, দল গঠনের পর কাঁথিতে লড়ে আমরা দ্বিতীয় হয়েছিলাম। অর্থাৎ অধিকারীদের বাদ দিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন। তিনি বলেন, চিন্তা নেই, এবারও আপনারা দ্বিতীয়ই হবেন, প্রথম হতে পারবেন না। প্রথম বিজেপি হবে, তারাই সরকার গড়বে। ২১ বছর যে দল করেছেন তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, অনেক কাজ সমর্থন করিনি, ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা নিয়ে কেউ থাকতে পারে না। ১০০-র ওপর বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন, এতে তাঁর কষ্ট হয়। আত্মসম্মান নিয়ে তৃণমূলে থাকা যায় না। যেখানে আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই, সম্মান নেই সেখানে তিনি থাকবেন না, এটা মেদিনীপুরের চরিত্র। মমতার নাম না করে তিনি বলেন, বলছে, মায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। মা কে? যিনি গর্ভধারিণী, জন্ম দিয়েছেন। সেই হিসেবে তাঁর মা গায়ত্রী অধিকারী, আর কেউ না। আর তিনি মা বলেন ভারত মাতাকে, যিনি স্বামী বিবেকানন্দের আরাধ্য দেবী। কাউকে মা বললে তা তিনি ভারত মাতাকে বলবেন, অন্য কাউকে মা বলা সম্ভব না।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও নাম করেননি শুভেন্দু। বরং বিজেপির ধাঁচেই বলেছেন ভাইপো। তিনি বলেন, তিনি যা করেন নিষ্ঠার সঙ্গে করেন। যখন তৃণমূলে ছিলেন স্লোগান দিয়েছেন, বিজেপি হঠাও ভারত বাঁচাও। এবার স্লোগান দেবেন, তোলাবাজ ভাইপো হঠাও।
তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল সরকার রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি চালু করতে দেয় না, কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসূচিগুলোর নাম পাল্টিয়ে নিজেদের নামে চালিয়ে দেয়। কলকাতা, দিল্লিতে এক সরকার থাকুক, নইলে বাংলা বাঁচবে না। এ রাজ্যের অর্থনীতি শেষ, বেকারদের চাকরি নেই, শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা দু-চার হাজার টাকার চাকরি করছেন, এসএসসির নিয়োগ নেই, টেটে দুর্নীতি চলছে। এই অবস্থায় বাঁচতে হলে নরেন্দ্র মোদির হাতে রাজ্যকে তুলে দিতে হবে। এ জন্য বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কাল থেকেই মাঠে নেমে পড়বেন তিনি।