কলকাতা: রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্তর সংখ্যা বেড়ে ১২। রাজ্যে আরও ৫ জন মিউকরমাইকোসিসে  আক্রান্ত বলে সন্দেহ। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, যাচাই করে দেখা হচ্ছে মেডিক্যাল রিপোর্ট। মিউকরমাইকোসিসে  আক্রান্ত হয়ে ২ জনের মৃত্যু বলে সন্দেহ। সংশ্লিষ্টদের মেডিক্যাল রিপোর্টও যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।


স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন। আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা পার্থসারথী দাস। উত্তর ২৪ পরগনার বিশ্বনাথ মণ্ডল। সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসা চলছে হাওড়ার সাঁতরাগাছির এক বাসিন্দার। এছাড়াও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একজন প্রৌঢ় ভর্তি রয়েছেন বেলভিউ হাসপাতালে। এরা প্রত্যেকেই করোনাকে হারিয়ে সেড়ে উঠেছিলেন। অন্যদিকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে ৩ জনের। তাঁদের দু’জনের বাড়ি বাঁকুড়া এবং একজন পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের বাসিন্দা। এই তিনজন আবার করোনা আক্রান্ত বলে জানানো হয়েছে হাসপাতালের তরফে।


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় এমনিতেই বেসামাল দেশ। রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। আর এরইমধ্যে ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে ছত্রাকজনিত রোগ ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস। ১০টি রাজ্য সরকারের পাশাপাশি ভয়াবহ এই অসুখকে ইতিমধ্যে মহামারী ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ক্রমশ চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে এ রাজ্যেও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে দাবি, রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস অর্থাৎ মিউকরমাইকোসিসে প্রাণ হারিয়েছেন দুজন। ছত্রাকজনিত রোগের মোকাবিলায় ২২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য দফতর।


ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গগুলি কেমন, তা নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের গাইডলাইন জারি করেছে। গাইডলাইনে বলা হয়েছে, চোখ ও নাকে ব্যথা, লাল হয়ে যাওয়া, জ্বর, কাশি, মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, রক্তবমি, মানসিক অস্থিরতা। স্বাস্থ্য দফতরের গাইডলাইনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, করোনা আক্রান্ত এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক উপসর্গগুলি হল, সাইনাস, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে কালচে জল অথবা রক্ত বেরনো, থুতনিতে অথবা মুখের যেকোনও একপাশে ব্যথা, দাঁতে ব্যথা, দাঁত পড়ে যাওয়া, চোয়ালে ও চোখে ব্যথা এক জিনিস দুটো দেখা। স্বাস্থ্য দফতরের গাইডলাইন আরও বলছে, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ব্যবহার, বেশিদিন ICU-তে থাকলে কোমর্বিডিটি বা অন্যান্য অসুস্থ থাকলেও শরীরে বাসা বাঁধতে পারে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস।