সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: স্থুলতার কারণেই নাকি গলব্লাডার স্টোন! অস্ত্রপচারের টাকা দিতে নারাজ বিমাসংস্থা। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ উপভোক্তা পরিবার। আদালতের নির্দেশে অবশেষে স্বস্তি।


বীমাসংস্থাকে সংশ্লিষ্ট পরিবারকে ১ লক্ষ ৭৬৯২২ হাজার টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি উপভোক্তা পরিবারকে মানসিক যন্ত্রণা ও হয়রানির জন্য দিতে হবে ৪০ হাজার টাকা। মামলার খরচ হিসাবেও  দিতে হবে ২০০০০ হাজার টাকা।

১৯৯৭ সাল থেকে স্বাস্থ্যবীমা করিয়ে আসছেন উত্তর কলকাতার শোভাবাজারের বাসিন্দা শ্রীপর্ণা রায়। ২০১৭ সালেও তিনি বীমার কিস্তি বাবদ মোট ৪৪৯৪২ টাকা জমা করেছেন, যার বিনিময়ে তিনি চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা কভারেজ পাবেন।  ২০১৭ সালের ৬ই অক্টোবর পেটে ব্যথা অনুভব করেন শ্রীপর্ণা দেবী। তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওষুধও নেন ।

কিন্তু কাজ না হওয়ায় সেদিনই স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। বিশদ স্বাস্থ্য-পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান যে তার গলব্লাডারে স্টোন রয়েছে এবং অস্ত্রপচার করতে হবে। সেই মোতাবেক ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে বিধাননগরের একটি নামি বেসরকারি হাসপাতালে তার অস্ত্রপচার হয়। ছাড়া পাওয়ার ৫ দিনের মধ্যে তিনি টাকার জন্য আবেদন করেন বীমা সংস্থার কাছে।

আবেদন খারিজ করে বীমা সংস্থা।তাদের দাবি, স্থূলতাই শ্রীপর্ণাদেবীর গল ব্লাডার স্টোনের কারণ। তাই বীমার টাকা তারা দেবেন না। বাধ্য হয়ে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন শ্রীপর্ণা রায় এবং তাঁর স্বামী দেবব্রত রায়।

আদালতের পর্যবেক্ষণ একমাত্র স্থূলতার কারণেই যে গলব্লাডার স্টোন  হয় সেটা নিয়ে চিকিৎসকরা এখনও প্রমাণ পাননি। বীমা সংস্থার কাছেও এবিষয়ে কোন তথ্য নেই যে স্থূলতার কারণেই গলব্লাডার স্টোন হয়।

মামলাকারীর আইনজীবী শমীক চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁর মক্কেল বারংবার বিমাসংস্থার দ্বারস্থ হয়েছেন। তাদের অনুরোধ করেছেন প্রাপ্য অর্থ দিয়ে দেওয়ার জন্য। যদি তাঁদের এই অনুরোধ-উপরোধে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেনি বিমাসংস্থা।  উপরন্তু হেনস্থার শিকার হতে হয় তাঁদের। আইনজীবীর আরও দাবি, অসুস্থতার সময়ে এভাবে হেনস্থার সম্মুখীন হতে হলে বিমাসংস্থা গুলির ওপর মানুষ আস্থা রাখবেন কীভাবে। আশা করি আদালতের রায়ের পর মানবিক হবে বীমাসংস্থাগুলি।