কলকাতা : করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্ভাব্য় কারণ কী? ভুল না গাফিলতি? এই প্রশ্নটাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। এরই মধ্যে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। আগেও ঘটেছিল এমন ঘটনা। কিন্তু সে-যাত্রায় বড় ক্ষতি এড়ানো গিয়েছিল। তাই প্রশ্নটা আরও জোরালো হচ্ছে, বারবার সতর্কতা সত্ত্বেও ঘুম ভাঙেনি রেলের?
একইরকম দুর্ঘটনা আগেও ?
ABP Ananda র রিপোর্ট বলছে, ৫ মাস আগেই মাইসোর ডিভিশনে একইরকম দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয় আপ সম্পর্ককান্তি এক্সপ্রেস। ৮ ফেব্রুয়ারি পয়েন্টের ভুলে মেন লাইন থেকে লুপ লাইনে ঢুকে যায় সম্পর্ককান্তি এক্সপ্রেস। গতি কম থাকায় বিপর্যয় এড়াতে সক্ষম হন লোকো পাইলট। চিঠি দিয়ে বিষয়টি উচ্চপদস্থ কর্তাদের জানান সাউথ ওয়েস্ট রেলওয়ের প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার। তারপরেও বালেশ্বর দুর্ঘটনা এড়াতে পারল না রেল! যদিও রেলের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
দক্ষিণ পশ্চিম রেলওয়ের প্রধান প্রধান অপারেশন ম্যানেজার হরি শঙ্কর বর্মা তাঁর লেখা নোটে উল্লেখ করেন, "যদি সংকেত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাটি অবিলম্বে পর্যবেক্ষণ করা না হয় এবং সংশোধন করা না হয়, তাহলে এটি এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবং গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটতে পারে"। রবিবারের সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। তৃণমূল মুখপাত্র সাকেত গোখলে ট্যুইটে প্রশ্ন তোলেন, কেন রেলওয়ে এই চিঠিতে উল্লিখিত সিস্টেমের ব্যর্থতার সতর্কতাকে উপেক্ষা করেছে?
রেল মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সিগনালের সমস্যার কারণেই ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে বালেশ্বরে। সিগনাল সবুজ থাকার পরও, কী করে মূল লাইন লুপ লাইনের দিকে ঘোরান ছিল? এখন এটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্তভার পড়েছে সিবিআইয়ের উপরে। ট্রেন দুর্ঘটনার নেপথ্যে নাশকতা নাকি, অন্তর্ঘাত, তা জানতেই এই সিবিআই তদন্ত।
বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় রেলের ইন্টারলকিং সিস্টেমেই কি লুকিয়ে আসল রহস্য? রেল সূত্রে খবর, যে দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়েছে ২৭৫ জনের, আহতের সংখ্যা হাজারের বেশি, সেই বিপর্যয়ের নেপথ্যে মানুষের ভুল বা অন্তর্ঘাত হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।আর এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলেই সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে। ভারতীয় রেলে এখন প্রায় পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই সিগন্যাল দেওয়া হয়। জরুরি বা বিশেষ পরিস্থিতিতে এর ব্যতিক্রম ঘটে। তবে সেক্ষেত্রে অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। প্রশ্ন উঠছে, করমণ্ডল-বিপর্যয়ে কী কোনওভাবে ম্যানুয়াল সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছিল? কিন্তু কেন? এখন সেই উত্তরই খুঁজবেন সিবিআই অফিসাররা।