বালেশ্বর: দুর্ঘটনার নেপথ্য কারণ নিয়ে ধন্দ রয়েইছে। মৃতের পরিসংখ্যান নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। রবিবার বিকেল পর্যন্ত বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছিল (Odisha Train Accident)। কোনও কোনও সূত্র আবার ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলা দাবি করে। কিন্তু রাতে সেই সংখ্যা সংশোধন করল ওড়িশা সরকার। তাদের দাবি, ২৯৫ বা ২৮৮ নয়, ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৭৫  জনের মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত (Odisha Death Toll)।


রবিবার সন্ধে পর্যন্তও বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৩০০ ছুঁইছুঁই। সংখ্যাটা ঘোরাফেরা করছিল ২৮৮ থেকে ২৯৫-এর মধ্যে। কিন্তু রাতে সরকারি ভাবে সেই পরিসংখ্যান সংশোধন করা হয়। জানানো হয়, ২৮৮ বা ২৯৫ নয়, ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন ২৭৫ জন। আহত হয়েছেন ১১৭৫ জন। হাসপাতাল থেকে ৭৯৩ জন ছাড়াও পেয়ে গিয়েছেন।


এদিন রাতে সংশোধিত মৃত্যুসংখ্যা প্রকাশ করেন ওড়িশার মুখ্যসচিব প্রদীপ জেনা। সোরো, বালেশ্বর, কটক এবং ভদ্রকের বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা চলছে বলে জানান তিনি। জানান, মৃতদের মধ্যে ৮৮ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। তার মধ্যে পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে ৭৮ জনের। এখনও ১৮৭ জনকে শনাক্ত করা যায়নি।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: মৃতের সংখ্যায় সংশোধন, ওড়িশা সরকার বলছে ২৭৫, মমতার প্রশ্ন, “আমাদের বাড়ছে, ওদের কমছে কী করে?”


মৃতের পরিসংখ্যান নিয়ে শনিবারই মতবিরোধ দেখা দেয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর মধ্যে। বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে মমতা দাবি করেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ উদ্ধারকার্য এখনও সম্পন্ন হয়নি। তিনটি কামরায় এখনও ঢোকা যায়নি বলে দাবি করেন তিনি। 


মমতার এই মন্তব্যে আপত্তি তোলেন অশ্বিনী। তিনি জানান, উদ্ধারকার্য তেমন বাকি নেই। মৃতের সংখ্যা ২৩৮। তার পাল্টা মমতা জানান, ২৩৮ পরিসংখ্যান শুক্রবারের। শনিবার তা আরও বেড়েছে। কিন্তু তাতেও একমত হননি রেলমন্ত্রী। রবিবার সাংবাদিক বৈঠকেও ফের মৃতের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। রাজ্যে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা যদি বাড়ে, সেখানে সরকারি পরিসংখ্যান কমছে কী করে, প্রশ্ন তোলেন তিনি।


রেলের তরফে জানানো হয়েছে, আহত সমস্ত যাত্রীকে উদ্ধার করা গিয়েছে। আহতদের চিকিৎসায় ১০০-র বেশি মেডিক্যাল টিম, ২০০-র বেশি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে বাতিল হয়েছে ৩৩টি ট্রেন, ৩৬টি ট্রেনের রুট বদল। যত দ্রুত সম্ভব, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে বলে জানান রেলমন্ত্রী।