বালেশ্বর : ট্রেনের কামরায় এখনও অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা। ট্রেনের দরজা ভেঙে, গ্যাস কাটারের সাহায্যে চলছে উদ্ধারকাজ। এই পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ ও আহতদের চিকিৎসায় সাহায্য করার জন্য মোতায়েন করা হল ভারতীয় সেনাকে। সেনার ইস্টার্ন কমান্ড থেকে পাঠানো হল মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং টিম। যাদের সঙ্গে এসে পৌঁছয় অ্যাম্বুল্যান্স ও সাপোর্ট সার্ভিস। বিভিন্ন বেস থেকে দলগুলি রওনা দেয়। যাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাহায্য করা যায়।
ওড়িশার বালেশ্বরে দুর্ঘটনার কবলে শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস, হাওড়া-যশোবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রেল। আহতর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬০০। ৩টি ট্রেনের সংঘর্ষে লাইনচ্যুত করমণ্ডলের ১৫টি ও হাওড়া-যশোবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেসের ৩-৪টি কামরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের কামরায় এখনও অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন। NDRF এর DG অতুল কারওয়াল বলছেন, "খুব মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। NDRF-এর ৯টি দল, ৩০০-র বেশি উদ্ধারকারী SDRF ও অন্যান্য এজেন্সির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করছে। আমাদের ইতিহাসে এটি তৃতীয় বৃহত্তম দুর্ঘটনা। তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষে বহু কোচ মুচড়ে গেছে এবং সেখানে মিশ্র অবস্থায় আছে। সেগুলো কেটে বের করা চ্যালেঞ্জের, যাতে দুর্ঘটনার শিকার যাঁরা তাঁদের কোনও ক্ষতি না হন।"
এদিকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পর শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন রেলমন্ত্রী। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ' এটা একটা ভয়ঙ্কর মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রেল, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং রাজ্য সরকার একযোগে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। সর্বোত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হবে। শুক্রবারই ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।'
করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে রেল। শুক্রবার রাতে টুইটে এ কথা জানান রেলমন্ত্রী বৈষ্ণব। তিনি লেখেন , ওড়িশায় মর্মান্তিক এই রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের ২ লক্ষ এবং কম আঘাত পেয়েছেন যাঁরা , তাঁদের ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়া হবে।
এদিকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের কামরায় এখনও অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা। ট্রেনের দরজা ভেঙে, গ্যাস কাটারের সাহায্যে চলছে উদ্ধারকাজ। নামানো হয়েছে সেনাবাহিনীকে। ড্রোন ও স্নিফার ডগ নিয়েও চলছে তল্লাশি। অক্ষত কামরাগুলিতে স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে এনডিআরএফ। হেলিকপ্টারের সাহায্যেও যাত্রীদের উদ্ধার করা হচ্ছে। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ওড়িশা পুলিশের ফরেন্সিক দল।