বালেশ্বর: মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারতে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই আবহেই করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা নিয়ে নাশকতার ইঙ্গিত উঠে এল (Odisha Train Accident)। এর মধ্যে নিশ্চয়ই কিছু রয়েছে, ভাল করে সবদিক খতিয়ে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee), যিনি দীর্ঘ দিন রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। আর তাতেই নাশকতার তত্ত্ব মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে- (Coromandel Express Accident)। 


বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ২৬১। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬৫০ জন। এর মধ্যে বাংলার প্রচুর যাত্রী রয়েছেন। তাই ওড়িশা পৌঁছে গিয়েছেন মমতা। শনিবার সোরো হাসপাতালে আহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। রাজ্য সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ ঘোষণার পাশাপাশি, বাস পাঠিয়ে আহতদের রাজ্যে ফেরানোর কথাও জানেন। 


আর সেখানেই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর পাশে দাঁড়িয়ে রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। এ দিন মমতা বলেন, "আমি যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম, দুর্ঘটনা প্রতিরোধী যন্ত্র (Anti Collison Device) তৈরি করেছিলাম। গোয়ায় গিয়ে সব ব্যবস্থা হয়েছিল। তার পর থেকে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছিল। এটি এমন একটি যন্ত্র, যা ট্রেনে বসানো থাকলে, এক লাইনে যদি দু'টি ট্রেন এসে পড়ে, বা সামনে কিছু পড়ে থাকে, আপনা থেকেই থেমে যাবে ট্রেন। কিছু গড়বড় দেখলে সতর্কবার্তা যাবে।"


আরও পড়ুন: Coromandel express accident: কলকাতা থেকে পাঠানো হল চিকিৎসার সরঞ্জাম, হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়ল বিশেষ ট্রেন


এর পর সরাসরি রেলমন্ত্রীর উদ্দেশে মমতা বলেন, "আপনি বিষয়টি দেখুন। আমার কাছে খবর আছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনে দুর্ঘটনা প্রতিরোধী যন্ত্র ছিল না। যা ঘটে গিয়েছে, ঘটে গিয়েছে। এতগুলি প্রাণ তো আর ফিরবে না! কিছু বলার ভাষা নেই। কিন্তু এর মধ্যে নিশ্চয়ই কিছু আছে। ভাল করে সবদিক খতিয়ে দেখতে হবে। এতগুলি মানুষের প্রাণ চলে গিয়েছে।"


এ দিন রেলেরও তীব্র সমালোচনা করেন মমতা। বলেন, "রেল বিভাগকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এই ঘটনায় চূড়ান্ত গাফিলতি রয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভাবা হয় না। খুব খারাপ পরিস্থিতি। দুর্ঘটনা প্রতিরোধী যন্ত্র করে দিয়ে এসেছিলাম আমি। সেটা থাকলে দুর্ঘটনা ঘটত না।"


ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যেই। কী ভাবে দুর্ঘটনার কবলে পড়ল তিনটি ট্রেন, তা নিয়ে বাড়ছে রহস্য। এখনও দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামরা থেকে বের করা হচ্ছে দেহ। মৃত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এই মুহূর্তে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে সেনা, এনডিআরএফ। গ্যাসকাটার দিয়ে ট্রেনের বগি কেটে চলছে উদ্ধারকাজ। বাংলা থেকে দু'দফায় যথাক্রমে ৭০ এবং ৪০টি অ্যাম্বুল্যান্স, দু'টি বাস ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে বলে জানান মমতা। চিকিৎসক এবং নার্সের একটি দলও গিয়েছে। মেদিনীপুর থেকে আধিকারিকদের একটি দলও সেখানে পৌঁছচ্ছে বলে জানান মমতা। আহত যাত্রীদের ফেরাতে আরও বাস পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন মমতা।