বালেশ্বর: ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু। হাজারেরও বেশি জখম। এখনও নিখোঁজ অনেকে। মৃতদের অনেকেরই পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। কিন্তু যে ২টি এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। সে দুটির চালকের কী খবর? কেমন রয়েছেন তাঁরা? কোথায় রয়েছেন?


ওড়িশার একটি সংবাদমাধ্যম ওড়িশা টিভির একটি রিপোর্ট অনুযায়ী। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লোকো পাইলট গুরুতর জখম। তাঁর একটি পা ভেঙেও গিয়েছে। জ্ঞান থাকলেও ভীষণ দুর্বল তিনি, দুর্ঘটনাজনিত মানসিক আঘাতও রয়েছে। তাঁর যিনি সহকর্মী তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং ওই হাসপাতালেই ICU-তে রয়েছেন।


করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ওই দুই লোকো পাইলট এখন চিকিৎসাধীন। ওই দুইজনের পরিবারও আতঙ্কে রয়েছেন। কারণ অনেকেই দুর্ঘটনার জন্য ওই লোকো পাইলটের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দি হিন্দুর খবর অনুযায়ী, ওই দুই জনের পরিবার জানিয়েছে তাঁদের বিষয়ে যেন খবর না করা হয়। দি হিন্দুর খবর অনুযায়ী, এক ঊর্ধ্বতন রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এই পরিস্থিতিতে কোনও লোকো পাইলটের করার কিছু থাকে না। 


কী করেন লোকো পাইলট? ট্রেন চালু করা, থামানো, গতি বাড়ানোর কাজ করে থাকেন লোকো পাইলট। রাতের বেলায় প্রতি ঘণ্টায়  ১২৮ কিলোমিটার গতিবেগে ছুটে চলা ট্রেন থেকে লোকো পাইলট এটা দেখতেই পারতেন না যে তাঁর ট্রেন কোনও ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগতে চলেছে। বিশেষ করে যখন তিনি গ্রিন সিগন্যাল দেখেছেন।


নিরাপত্তার কারণেই ওই দুইজনকে আলাদা রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। তাঁদের বিষয়ে কোনও তথ্য বলতেও চাইছে না সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল। সূত্রের খবর, নিরাপত্তার কারণেই তাঁদের পরিচিতি বাইরে আনা হচ্ছে না। মালগাড়ির চালক সুস্থ রয়েছেন। যখন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, তখন তিনি চা খাওয়ার জন্য বাইরে ছিলেন। 


চরম বিপাকে বাংলার পর্যটকরা: শুক্রবারের রেল বিপর্যয়ের ঘটনার পর কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে ওড়িশা-বাংলা পরিবহণ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে বাঙালির দ্বিতীয় হোমটাউন পুরীতে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা। ২ দিন বন্ধ থাকার পর, ট্রেন চলাচল শুরু হলেও টিকিট নেই। বাসের ভাড়া আকাশছোঁয়া।গাড়ি যা ভাড়া চাইছে, তা সাধারণ মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সুযোগ বুঝে, যেমন খুশি ভাড়া চাওয়া হচ্ছে পর্যটকদের থেকে। বাস ভাড়া পৌঁছেছে মাছাপিছু ২-৩ হাজার টাকায় এমনকি সরকারি বাসের ক্ষেত্রেও চাওয়া হচ্ছে বেশি ভাড়া। গাড়ি চাইছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা । এমনকি পুরীর হোটেলগুলিতেও লাগামছাড়া ভাড়া নেওযার অভিযোগ করছেন পর্যটকরা। পরিবার নিয়ে ঘুরতে গিয়ে বিপাকে বহু পর্যটক।

এই পরিস্থিতিতে, পুরী স্টেশনে সোমবার সকাল থেকেই থিকথিকে ভিড় পর্যটকদের।  শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার যাদের ফেরার কথা ছিল সেই সবকটি ট্রেনই বাতিল হয়েছে।সোমবার থেকে ট্রেন চালু হলেও তৎকালে এত টিকিট পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না টিকিটের ভাড়া ফেরত পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন অনেকেই। একাধিক হোটেলে চেক আউটের সময় নিয়েও বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা। পুরী স্টেশনের মতোই বাসস্ট্যান্ডেও দেখা গেল একই ছবি। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা থেকে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার বিমানের টিকিটও আকাশছোঁয়া। কখনও দ্বিগুণ, কখনও বা তিনগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে বিমানযাত্রীদের। কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বর যেতে গুনতে হচ্ছে ১২,৫০০ টাকা। কর্মসূত্রে ভুবনেশ্বর আসতে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয়েছে কলকাতার বাসিন্দাকে। দুর্ঘটনার ৩ দিন পরও এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় দুর্ভোগে হাজার হাজার মানুষ।


আরও পড়ুন: গরম পড়লেই ভরসা আখের রসে? কতটা কাজে লাগে? আদৌও উপকার রয়েছে?