কুয়ালা লামপুর : প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে অগুনতি মানুষ গাড়ি, বাস, মেট্রো, শেয়ার ট্যাক্সি-সহ নানা গণ-পরিবহনে অফিস যাতায়াত করেন। সময়ে অফিস পৌঁছনোয় থাকে লক্ষ্য। কিন্তু, রোজ অফিস যাওয়ার জন্য এরকম পরিবহন ব্যবস্থাকে বেছে নিয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মহিলা। তিনি আবার দুই সন্তানের মা-ও। কাজের দিনগুলিতে বিমানে অফিস যাতায়াত করেন তিনি। কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনী, আকাশপথে শত শত কিলোমিটার যাওয়ার মতো বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাকে অনায়াসে জয় করে নিয়েছেন তিনি। 


দীর্ঘ পথ যাতায়াত নিয়ে যখন অধিকাংশ মানুষের নালিশের শেষ থাকে না, এই মহিলা তখন বিস্ময়করভাবে নিয়মিত আকাশপথে যাতায়াত করেন। সপ্তাহে ৫ দিন তাঁকে অফিস যেতে হয়। আর প্রত্যেক দিনই তাঁর যাতায়াতের মাধ্যম থাকে বিমান। ছুটি কাটাতে বা ব্যবসায়িক কোনও ভ্রমণে নয়, শুধুমাত্র কাজে যোগ দিতে এই পথ বেছে নেন তিনি।


রাশেল কৌর নামের ওই মহিলা মালয়েশিয়ায় এয়ারএশিয়া নামে সংস্থায় ফাইনান্স বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসাবে কাজ করেন। তাঁর মতে, এই রুটিন তাঁর পক্ষে শুধু সামঞ্জস্যপূর্ণই নয়, আর্থিক-সাশ্রয়েরও। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, এই শিডিউল তাঁকে তাঁর দুই সন্তানের সঙ্গে পর্যাপ্ত সময় কাটাতেও সাহায্য করে। 


এর আগে কুয়ালা লামপুরে অফিসের কাছে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। এরপর মালয়েশিয়ারই পেনাঙ্গে বাড়ি ফিরতেন। সপ্তাহে একদিনই সেটা করতে পারতেন তিনি। যদিও দীর্ঘ সময় সন্তানদের থেকে দূরে থাকার ফলে অফিস ও পারিবারিক জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পারছিলেন না ।


এই পরিস্থিতিতে তিনি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবনা-চিন্তা করেন। ২০২৪-এর গোড়াতেই তিনি রোজ বিমানে যাতায়াতের কথা ভেবে নেন। এবং লাভের লাভ হল, এই রুটিনের ফলে তিনি চাকরি ও ব্যক্তিগত জীবনে ভারসাম্যও বজায় রাখতে পারছেন। এক সাক্ষাৎকারে এমনই জানিয়েছেন তিনি। কৌরের কথায়, "আমার দুই সন্তান রয়েছে। দু'জনেই বড় হচ্ছে। আমার বড় ছেলের বয়স ১২ বছর এবং কন্যার বয়স ১১ বছর। তারা বড় হতে থাকায়, অধিকাংশ সময় মা হিসাবে তাদের চারপাশে থাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। এই ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গে, আমি রোজ বাড়ি ফিরতে পারি এবং সন্তানদের রাতে দেখতে পাই।" 


নিজের দৈনন্দিন রুটিনের কথা বলতে গিয়ে কৌর জানান, রোজ ভোর ৪টেয় ওঠেন। এরপর রেডি হয়ে ৫টার মধ্যে অফিস বেরিয়ে যান। পেনাঙ্গ বিমানবন্দর পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে যান। এরপর সাড়ে ৬টার বিমানে কুয়ালা লামপুরে যান। পৌনে ৮টা নাগাদ, তিনি অফিস পৌঁছে যান। কাজ শেষ করে রাত ৮টার মধ্যে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন।