নয়াদিল্লি : ইরান ও ইজরায়েল সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একথা ঘোষণা করতেই তেলের বাজারে তার সরাসরি প্রভাব পড়ল। এক সপ্তাহের বেশি সময় পর আজ মঙ্গলবার কমল তেলের দাম। সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে সরবরাহ সংক্রান্ত যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল, সেই চিন্তা কমতেই বাজারে তার প্রভাব পড়ল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম ২.৬৯ ডলার বা ৩.৭৬% কমে ব্যারেল প্রতি ৬৮.৭৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা সেশনের শুরুতে ৪% এরও বেশি কমে ১১ জুনের পর সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছিল। ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেলের দাম ২.৭ ডলার বা ৩.৯৪% কমে ব্যারেল প্রতি ৬৫.৪৬ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ৯ জুনের পর থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং প্রায় ৬% কমেছে।
সোমবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে, ইজরায়েল এবং ইরান যুদ্ধবিরতিতে সম্পূর্ণরূপে সম্মত হয়েছে। ইরান অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি শুরু করবে। ১২ ঘণ্টা পর ইজরায়েল যুদ্ধবিরতি শুরু করবে। উভয় পক্ষ যদি শান্তি বজায় রাখে, তাহলে ১২ দিনের সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে ২৪ ঘণ্টা পর আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ শেষ হবে। "যুদ্ধবিরতির খবরের সঙ্গে সঙ্গে এখন গত সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের দামে তৈরি ঝুঁকির প্রিমিয়ামের ধারাবাহিকতা প্রায় অদৃশ্য হয়ে যেতে দেখছি," একথা বলেন আইজি-র বিশ্লেষক টনি সাইকামোর।
ইজরায়েলের পক্ষ নিয়ে আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে ঝাঁপাতেই হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় ইরান। সে দেশের সংসদ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার অনুমোদন দেয়, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর উপর ছেড়ে দেয়। তাতে চিন্তার ভাঁজ পড়ে ভারতের কপালেও। বিশ্বজুড়ে তেল সরবরাহের জন্য এই প্রণালী খুব গুরুত্বপূর্ণ। বহু দেশের অর্থনীতি নির্ভর করে হরমুজ প্রণালীর উপর। হরমুজ প্রণালী একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ যে সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে অবস্থিত। এটি বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত জলপথ। এই পথ দিয়ে প্রতিদিন ২ কোটির বেশি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করা হয়। বিশ্বে জ্বালানি সরবরাহের ২০% থেকে ২৫% হয় এই প্রণালী দিয়ে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিশ্বের ২০%-৩০% Liquefied Natural Gas বা LNG সরবরাহ হয়। ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিলে স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বের বাজারে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের জোগান কমার আশঙ্কা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধিরও আশঙ্কা। আর অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে ভারতেও পেট্রোল-ডিজেলের দামে আগুন লাগতে পারে।