শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : বিরল প্রজাতির ডলফিন ধরার অভিযোগে গ্রেফতার এক ব্যক্তি। ধৃতের নাম আক্কাস আলি শেখ। আজ ধৃতকে তুফানগঞ্জ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে দুই দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। কোচবিহাররে তুফানগঞ্জের চিলাখানা এলাকার ঘটনা। ঘটনায় অন্য এক অভিযুক্তের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ ও বন দফতর।


তুফানগঞ্জে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বয়ে চলেছে কালজানি নদী। মাঝেমধ্যেই এই নদীতে চলে আসে ডলফিন। মূলত ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে সংযোগ থাকায় বর্ষায় এদের বেশি দেখা যায়। এই ডলফিন স্তন্যপায়ী প্রজাতির বন্য সংরক্ষণ আইনে সিডিউল ১, পার্ট ১ সংরক্ষিত প্রাণী। যেমনটা- বাঘ বা হাতির ক্ষেত্রে আইন রয়েছে, একই আইন প্রযোজ্য ডলফিনের ক্ষেত্রেও। তাই ডলফিন ধরা, মারা একেবারেই নিষিদ্ধ। ডলফিন ধরার ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে অথবা হতে পারে ২৫ হাজার থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
 
তবে অনেকেই জেনে বা না জেনে ডলফিন শিকারে ব্যস্ত। তার প্রমাণ মিলল কোচবিহারে দক্ষিণ চিড়লাখানায়। কালজানি নদীতে ডলফিন শিকার ও তার মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠল দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বন দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় জেলে আক্কাস আলি শেখ প্রায় ২৫ কেজি ওজনের একটি ডলফিন শিকার করে তা ৬৫০০ টাকায় বিক্রি করে সমীর শেখ নামে এক ব্যক্তির কাছে। সমীর সেই ডলফিনের মাংস কেটে তা বিক্রির উদ্দেশ্যে বাড়িতে রেখেছিল। খবর পায় বন দফতর। 


শুক্রবার পুলিশ ও বন দফতর যৌথভাবে অভিযান চালায়। ওই সময় সমীর শেখ পালিয়ে গেলেও, শেষ রক্ষা হয়নি আক্কাসের। বন দফতরের হাতে ধরা পড়ে যায় সে। জেরায় সে ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। কোচবিহারের ডিএফও সঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, ওই ব্যক্তি জেনে বুঝেই ডলফিন শিকার করেছিল। যা বেআইনি। এর পিছনে আরও বড় কোনও চক্র আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা এলাকার মানুষকে সচেতন করছি, যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। 


ঘটনায় চিন্তিত পরিবেশপ্রেমীরাও। ন্যাস গ্রুপের কর্ণধার অরূপ গুহ বলেন, “অনেক দিন ধরেই চোরা শিকার হচ্ছে এই এলাকায়। এখন প্রকাশ্যে এল।"