নয়াদিল্লি: আগামী সপ্তাহে আমেরিকা সফরে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সেখানে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ আলোচনা হওয়ার কথা তাঁর। কিন্তু তার আগে যেভাবে ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠাল ট্রাম্প সরকার, সেই নিয়ে প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার সংসদের বাজেট অধিবেশনও উত্তাল হল সেই নিয়ে। হই-হট্টগোলের জেরে দুপুর পর্যন্ত লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি হয়ে গেল। (Indian Illegal Immigrants)


বুধবার ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে পঞ্জাবের অমৃতসরে নামে আমেরিকার বায়ুসেনার বিমান। কিন্তু ওই বিমান এবং ভারতীয় অভিবাসীদের ধারেকাছে সেই সময় ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি সংবাদমাধ্যমকে। কিন্তু রাত পেরোতে একে একরে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভারতীয় অভিবাসীরা। আর তাতে দুর্বিসহ যন্ত্রণার কথা উঠে এসেছে। পাশাপাশি, প্রশ্ন উঠছে ভারতের বিদেশ নীতি নিয়েও। আর সেই আবহেই সংসদ তেতে উঠেছে। (Indian Parliament)


এদিন সংসদ ভবনে হাতে প্রতীকী হাতকড়া পরে প্রতিবাদ জানান বিরোধী শিবিরের সাংসদরা। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধী, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়গে, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী, অখিলেশ যাদব থেকে প্রায় সকলেই ছিলেন সেখানে। হাতে পোস্টারও ছিল বিরোধী সাংসদদের, যাতে লেখা ছিল, ‘মানুষ, বন্দি নই’, ‘প্রত্যেক ভারতীয়ের সম্মান, ন্যায় দিন, শিকল নয়’, ‘ভারতের হাতে হাতকড়ি, এই অপমান সহ্য করা হবে না’।



ভারতীয় অভিবাসীদের সঙ্গে যে অমানবিক আচরণ করেছে আমেরিকা, তার বিরুদ্ধে সরব হন বিরোধী সাংসদরা। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের জবাব দাবি করেন। এর পর অধিবেশন শুরু হলে, লোকসভা এবং রাজ্যসভার কক্ষও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভারতীয় অভিবাসীদের যেভাবে ফেরত পাঠিয়েছে আমেরিকা, সেই নিয়ে আলোচনা দাবি করেন বিরোধীরা। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এতে চটে ওঠেন। পরিকল্পনা করে অধিবেশন ভেস্তে দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। 


বিরোধী সাংসদদের উদ্দেশে বিড়লা বলেন, “আপনাদের কথা সরকাররে কাছে পৌঁছেছে। বিদেশ মন্ত্রকের অধীনস্থ বিষয় এটি। অন্য দেশের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে। সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।” কিন্তু তার পরও হট্টগোল থামেনি। কংগ্রেস, সিপিআই, তৃণমূল, আম আদমা পার্টি, সিপিএম-এর সাংসদরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এতে দুপুর ২টো পর্যন্ত অধিবেশন স্থগিত হয়ে যায় দুই কক্ষেই। 


কংগ্রেসের কেসি বেণুগোপাল ইতিমধ্যেই লোকসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব জনা দিয়েছেন। কূটনৈতিক স্তরে কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তা নিয়ে সরকারের জবাব চেয়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত যা খবর, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আজ সংসদে বিবৃতি দিতে পারেন।