নয়া দিল্লি: পেশায় কমলা বিক্রেতা। কর্ণাটক রাজ্যের ম্যাঙ্গালোর শহরে ঘুরে ঘুরে কমলা বিক্রি করেন তিনি। আর তিনিই কি না পেলেন দেশের চতুর্থ বেসামরিক পদক 'পদ্মশ্রী' পেলেন। অনেকেই হয়ত ভাববেন পেশায় কমলালেবু বিক্রেতা কী কারণে এমন পুরস্কার পেলেন? আসলে হরেকালা হাজাব্বা সম্মান পেয়েছেন মানবিকতার জন্য। 


কমলা বিক্রেতা তার প্রতিদিনের আয় বিনিয়োগ করেন তার গ্রামের একটি স্কুলের বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য তা ব্যয় করেন। জানা গেছে, যে গ্রামে হাজাব্বা থাকেন সেখানে একটিও স্কুল ছিল না। নিজের সামান্য রোজগারের কিছু অংশ জমিয়ে ২০০০ সালে একটি স্কুল স্থাপন করেন তিনি। এরপর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে ক্রমে ঋণ নিয়ে স্কুলের জন্য জমিও কিনে ফেলেন হাজাব্বা।


আরও পড়ুন, ছত্তীসগঢ়ে সিআরপিএফ ক্যাম্পে সহকর্মীর গুলিতে নিহত বাংলার জওয়ান


এক সংবাদমাধ্যমকে হাজাব্বা জানিয়েছেন, "এক বিদেশি দম্পতি আমাকে কমলালেবুর দাম জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। আমি টুলু ও বিয়ারি ছাড়া কোনও ভাষা জানি না। তারা চলে গেলেন। আমার খুব খারাপ লাগল। এবং ঠিক করি অন্তত আমার গ্রামের বাচ্চাদের যেন এমন সমস্যায় পড়তে না হয়। আমি বুঝতে পারি, যোগাযোগ একজনের জীবনে কীভাবে প্রগতি আনতে পারে।”



তিনি বলেন, "আমি কোনও শিক্ষা গ্রহণ করিনি। এটি আমাকে একটি স্বপ্ন নিয়ে একটি স্কুল তৈরি করতে শুরু করেছিলাম, যে আমার গ্রামের প্রতিটি শিশু শিক্ষিত হবে। আজ, স্কুলে ১৭৫ জন ছাত্র রয়েছে এবং ১০ তম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস করছে।"


ষাটোর্ধ্ব হরেকালা হাজাব্বা দিনে ১৫০ টাকা মতো রোজগার করেন। সেই টাকা দিয়েই স্কুল শুরু করেন তিনি। আর এবার সেই চেষ্টারই পুরস্কার পেলেন তিনি। হাজাব্বা সমাজে তার অসাধারণ অবদানের জন্য পরিচিত। নিজের সীমাবদ্ধ পরিস্থিতিতেও তিনি নিজ গ্রামে শিক্ষার জন্য কাজ করেছেন। আর কর্ণাটকের নিজের গ্রামে এখন ‘অক্ষর সান্তা’ নামে পরিচিত হারেকালা হাজাব্বা। সরকার তার গ্রামে উচ্চশিক্ষার জন্য এবার একটি কলেজ তৈরি করে দেবে, সেই স্বপ্নই এখন দেখেন সকলের প্রিয় হরেকালা।