বেঙ্গালুরু: খেটে খাওয়া মানুষের জন্য উৎসর্গ করেন নিজের জীবন। ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানপ্রাপ্ত সেই বিজ্ঞানীরই রহস্যমৃত্যু। কয়েক দিন আগে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত কাবেরী নদীর জলে ভাসতে দেখা গেল তাঁর দেহ। বিজ্ঞানীর এমন পরিণতি হল কী করে, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। তদন্ত শুরু করেছে কর্নাটক পুলিশ। (Padma Shri Subbanna Ayyappan)
Indian Council of Agricultural Research (ICAR)-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল তথা ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান প্রাপ্ত বিজ্ঞানী, ডঃ সুবন্না আয়াপ্পানের কাবেরীর জলে ভাসতে দেখা যায়। কর্নাটকের শ্রীরঙ্গপটনার বাসিন্দারা বিজ্ঞানীদের দেহ ভাসতে দেখেন। শনিবার, ১০ মে সেই খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছে। মহীশূরে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন আয়াপ্পান। ৭ মে, রবিবার সন্ধে থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। (Karnataka News)
কাবেরী নদীর জল থেকে বিজ্ঞানী আয়াপ্পানের দেহটি উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ এসে দেহটি শনাক্ত করে। নদীর পাড়ে পড়ে ছিল তাঁর স্কুটার। আর সেই কারণেই রহস্য আরও দানা বেঁধেছে। শ্রীরঙ্গপটনা থানার পুলিশ এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে। কী অবস্থায় মৃত্যু হয় বিজ্ঞানীর, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
বিজ্ঞানী আয়াপ্পানকে ভারতের ‘নীল ক্রান্তি মিশন’ বা ‘নীল বিপ্লবে’র জনক বলা হয়। মৎস্যচাষী এবং মৎস্যশিকারীদের রোজগার নিয়ে ভেবেছিলেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই মৎস্যচাষের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা থেকে মৎস্যশিকারের বিধিনিয়ম কার্যকর হয় ভারতে। গ্রামীণ জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়ন ঘটান তিনি। খাদ্যব্যস্থার উন্নয়ন ঘটান, উপকূল এবং অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করেন। গ্রামীণ জীবনের মানোন্নয়নের জন্যই ২০২২ সালে তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে সম্মানিত করা হয়।
১৯৫৫ সালের ১০ ডিসেম্বর কর্নাটকেরই এলান্দুরে জন্ম বিজ্ঞানী আয়াপ্পানের। ১৯৭৫ সালে ফিশারি সায়েন্সে স্নাতক বন, ১৯৭৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৮ সালে ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস থেকে PhD অর্জন করেন বিজ্ঞানী আয়াপ্পান। সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্রেশওয়াটার অ্যাকোয়াকালচারের ডিরেক্টর ছিলেন। সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফিশারিজ এডুকেশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব সামলান। তাঁর হাতেই প্রতিষ্ঠা হয় ন্যাশনাল ফিশারিজ ডেভলপমেন্ট বোর্ডের। ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশনের সচিবো ছিলেন। পরবর্তীতে ন্য়াশনাল অ্যাক্রেডিশন বোর্ড ফর টেস্টিং অ্যান্ড ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরিজ এবং সেন্ট্রাল এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলান। স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে রেখে গেলেন তিনি।