নয়াদিল্লি: পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ক্ষত এখনও দগদগে। হামলায় পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে যখন কাটাছেঁড়া চলছে, সেই আবহেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামলাকারী এক জঙ্গির শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হল। সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে সম্প্রতি উপত্যকায় মারা যায় হাবিব তাহির নামের ওই জঙ্গি। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গ্রামের বাসিন্দা ছিল সে। সেখানে গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। এতে পহেলগাঁও হামলায় পাকিস্তানের ভূমিকা আরও স্পষ্ট বোঝা গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। (Pahalgam Attack)
পহেলগাঁও হামলার জবাবে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যখন ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চালায় ভারত, সেই সময়ও নিহত জঙ্গিদের শেষকৃত্যে পাক সেনা আধিকারিকদের উপস্থিতি চোখে পড়ে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবাই হাবিবকে প্রশিক্ষণ দেয় এবং হামলার কাজে তাকে নিযুক্ত করে। হাবিব দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের সদস্য ছিল। পহেলগাঁও হামলার দায় স্বীকার করে ওই সংগঠনই। সম্প্রতি ওই সংগঠনকে জঙ্গি সংগঠব ঘোষণা করেছে আমেরিকা। (Pakistan Occupied Kashmir)
গত ২৮ জুলাই জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের হারওয়ানে সেনার অভিযানে পহেলগাঁওয় হামলায় যুক্ত তিন জঙ্গি মারা যায়। সেই অভিযানের নাম রাখা হয় ‘অপারেশন মহাদেব’। নিহত তিন জঙ্গিই লস্করের সদস্য বলে জানান শ্রীনগরের সিনিয়র পুলিশ সুপার জিভি সন্দীপ চক্রবর্তী। ওই তিনজনের মধ্যে একজন ছিল হাবিব। গত ৩০ জুলাই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গ্রামে তার শেষকৃত্য ও প্রার্থনার আয়োজন হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
পরিবার, পরিজন, গ্রামবাসী ছাড়াও হাবিবের শেষকৃত্যে লস্করের কমান্ডার রিজওয়ান হানিফ যোগ দিতে গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে হাবিবের শেষকৃত্যে পৌঁছয় সে। হাবিবের পরিবার যদিও লস্করের কমান্ডার হানিফকে শেষকৃত্যে যোগ দিতে রাজি হয়নি। কিন্তু হানিফের ভাইপো পরিবারকে হুমকি দেয়, মাথায় বন্দুক ঠেকায় বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। অশান্তি চরমে উঠলে হানিফ এবং তার সহযোগীরা শেষকৃত্য থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
লস্কর নেতাকে ঘিরে গ্রামবাসীদের এই বিক্ষোভ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক মহলে বার বার প্রশ্নের মুখে পড়ে নিজেদের সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থান তুলে ধরতে এই মুহূর্তে মরিয়া পাকিস্তান। গত মাসেই পাকিস্তান সরকার জানায়, লস্করের সংগঠন ভেঙে দিয়েছে তারা। পহেলগাঁও হামলায় ওই সংগঠনে যুক্ত থাকার বিষয়টি নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়।