জম্মু/শ্রীনগর : জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গ্রামগুলিকে টার্গেট করছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। সমানে কামান থেকে গোলাবর্ষণ ও মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে ওপ্রান্ত থেকে। যার জেরে ইতিমধ্যেই উপত্যকায় চার শিশু-সহ অন্ততপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম আরও ৫৭ জন। সংবাদ সংস্থা PTI সূত্রের খবর।
পহেলগাঁও হামলার জোরদার জবাব দিয়েছে ভারত। ২৬ জন নিরীহের প্রাণের বিনিময়ে 'অপারেশন সিঁদুর' চালিয়ে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুড়িয়ে দিয়েছে ভারতের নিরাপত্তাবাহিনী। মধ্যরাতে ক্ষেপণাস্ত্র হানায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ঘাঁটিগুলি। তার পর থেকে সীমান্তে ভারী শেল নিক্ষেপ করে যাচ্ছে পাক বাহিনী। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনাও। যার জেরে শত্রুপক্ষেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাকিস্তানের একাধিক সেনা পোস্ট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের হামলায় সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে পুঞ্চ জেলায়। যেখানে নিহতরা সকলেই সাধারণ নাগরিক। এমনই জানিয়েছেন আধিকারিকরা। তাঁদের সংযোজন, ওই এলাকায় গোলাগুলিতে ৪২ জন জখমও হয়েছেন। যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। এদিকে পাকিস্তান এভাবে নির্বিচারে গোলাগুলি চালানোয় সীমান্তবর্তী গ্রামে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যাঁরা বাধ্য হয়ে ভূতল বাঙ্কারে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বা, কেউ কেউ অন্য কোনও নিরাপদ আশ্রয় বা অন্য গ্রামে গিয়ে মাথা গুঁজছেন, এমনই জানাচ্ছেন আধিকারিকরা।
পুঞ্চের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বালাকোট, মেন্ধার, মানকোট, কৃষ্ণা ঘাঁটি, গুলপুর, কেরনি, এমনকী পুঞ্চ জেলা সদর দফতর থেকে গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। যার ফলে কয়েক ডজন বাড়ি এবং যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, বারামুল্লা জেলার উরি সেক্টরে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে গোলাবর্ষণে পাঁচজন নাবালক শিশু-সহ দশজন আহত হয়েছেন। রাজৌরি জেলায় আরও তিনজন আহত। কুপওয়াড়া জেলার কর্ণাহ সেক্টরে গোলাবর্ষণের ফলে বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লেগেছে।
সীমান্তের ওপার থেকে দুপুর পর্যন্ত তীব্র গোলাবর্ষণ অব্যাহত ছিল এবং পরেও মাঝেমধ্যে তা হয়। বেশিরভাগই পুঞ্চ সেক্টরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুঞ্চ বাস স্ট্যান্ডেও ভারী গোলাবর্ষণের কারণে স্থানীয়রা হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যায় পড়েন। যার ফলে বেশ কয়েকটি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্তও হয়। এর আগে, একজন প্রতিরক্ষা মুখপাত্র জানিয়েছিলেন যে, ৬ এবং ৭ মে মধ্যরাতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরের বিপরীতে নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপারে অবস্থিত পোস্টগুলি থেকে কামান নিক্ষেপ সহ নির্বিচারে গুলি চালায়।