ইসলামাবাদ: নির্বাচন মিটে গেলেও, ডামাডোল পাকিস্তানের রাজনীতিতে। জেলবন্দি ইমরান খান, নওয়াজ শরিফ নাকি বিলাবল ভুট্টো জারদারি, শেষ হাসি কে আসবেন, সেই নিয়ে চাপানউতোর চরমে। সেই আবহে খবরের শিরোনামে উঠে এলেন আর একজন। তিনি তালহা হাফিজ সইদ (Talha Hafiz Saeed), ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূলচক্রী, লস্কর-ই-তৈবার প্রধান হাফিজ সইদের ছেলে। লাহৌর থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন তিনি। (Pakistan Elections 2024)


লাহৌর থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে মাত্র ২ হাজার ২৪ ভোট পেয়েছেন তালহা। তাঁকে পরাজিত করেছেন ইমরানের দল পাকিস্তান-তৈহরিক-ই-ইনসাফ সমর্থিত নির্দল প্রার্থী লতিফ কোসা। তাঁর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৭ হাজার ১০৯টি ভোট। পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (PML-N)-এর নেতা খোয়াজা সাদ রফিক ৭৭ হাজার ৯০৭টি ভোট পেয়েছেন।


ভারতে নাশকতামূলক হামলায় একাধিক বার হাফিজের নাম উঠে এসেছে। ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূলচক্রীও তিনি। রাষ্ট্রপুঞ্জও হাফিজকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করেছে। ভারতেও একাধিক মামলায় নাম রয়েছে হাফিজের। বার বার প্রত্যর্পণের আবেদন জানানো হলেও, তাতে সায় দেয়নি পাকিস্তান। বরং তাদের তরফে জানানো হয়, দুই দেশের মধ্যে কোনও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির অস্তিত্ব নেই। ভারতের আবেদনে সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা কার্যতই উড়িয়ে দেওয়া হয়।


আরও পড়ুন: Pakistan Election 2024:ভোটগণনা শেষ পাকিস্তানে, এগিয়ে ইমরানের পিটিআই সমর্থিত নির্দলরা


তাই পাকিস্তানে হাফিজ বহাল তবিয়তেই ঘুরছেন বলে অভিযোগ করে দিল্লি। হাফিজকে নিয়ে বার বার আন্তর্জাতিক মহলেও আর্জি জানানো হয়। যদিও সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে জানানো হয়, পাকিস্তানে জেলবন্দিই রয়েছেন হাফিজ। সন্ত্রাস এবং সন্ত্রাসে আর্থিক মদত জোগানোর সাতটি মামলা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে জেলে রয়েছেন। ৭৮ বছরের সাজা হয়েছে তাঁর। জেলের কুঠুরিতেই রয়েছেন তিনি।


পাকিস্তানে নির্বাচন ঘিরে এই মুহূর্তে ডামাডোল চলছে। জেলবন্দি ইমরানের দল এবং তাদের সমর্থিত নির্দলরা সেখানে ৯১টি আসনে জয়ী হয়েছে। নওয়াজের দল জয়ী হয়েছে ৭৪টি আসনে। বিলাবলের দল ৫৪টি আসন পেয়েছে। ইমরানকে পরাস্ত করতে নওয়াজ এবং বিলাবল হাত মেলাতে পারেন বলে জল্পনা। জয়ী নির্দল প্রার্থীদের নিজেদের শিবিরে টানা করছেন সব পক্ষই। কিন্তু হাফিজের ছেলে জয়ের ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেননি। পাকিস্তানে হাফিজকে নিয়ে মতামত দ্বিধাবিভক্ত। সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তারই ফলশ্রুতি ভোটবাক্সে পড়েছে বলে মত সেদেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।