খাইবার পাখতুনখাওয়া : আত্মঘাতী হামলায় নিহত ১৩ জওয়ান। সাধারণ নাগরিক-সহ জখম হয়েছেন ২৯ জন। পাকিস্তানি তালিবান গোষ্ঠী ঘটনার দায় স্বীকার করেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ আধিকারিকরা এমনই জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থা এএফপিকে। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, এক আত্মঘাতী বোমাড়ু বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে এসে সামরিক কনভয়ের সঙ্গে ধাক্কা মারে। বিস্ফোরণে ১৩ জন জওয়ান নিহত হয়েছেন। আরও ১০ সেনাকর্মী এবং ১৯ জন সাধারণ নাগরিক জখম হয়েছেন। "বিস্ফোরণের জেরে দু'টি বাড়ির ছাদও ভেঙে যায়, তাতে ছয় শিশু আহত হয়েছে।" ওই জেলাতেই কর্মরত এক পুলিশ আধিকারিক এমনটা জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থা AFP-কে।
পাকিস্তান তালিবানের একটি অংশ হাফিজ গুল বাহাদুর সশস্ত্র গোষ্ঠীর আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী শাখা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। ২০২১ সালে কাবুলে তালিবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাকিস্তানে হিংসার ঘটনা অনেক বেড়েছে। ইসলামাবাদের অভিযোগ, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলার জন্য তাদের মাটি ব্যবহার করার অনুমতি দিচ্ছে পশ্চিমের প্রতিবেশী। যদিও এই দাবি তালিবান অস্বীকার করেছে। AFP-র তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং বালুচিস্তানে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির হামলায় প্রায় ২৯০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা কর্মকর্তা।
২০২৩ সালে পাকিস্তানে সেনাঘাঁটিতে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। পাকিস্তানি তালিবানের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করা হয়। আফগান সীমান্তে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে দেরা ইসমাইল খান জেলায় সাতসকালে এই ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় প্রশাসনের এক আধিকারিক একথা জানান। তাঁর বক্তব্য ছিল, অধিকাংশেরই মৃত্যু হয়েছে তাঁরা যখন ঘুমাচ্ছিলেন। ঘরোয়া পোশাকে ছিলেন তাঁরা।
ওই এলাকায় একটি স্কুল বিল্ডিংয়ে অস্থায়ী সেনাঘাঁটি তৈরি করা হয়েছিল। সেখানেই একটি বিস্ফোরক-ভর্তি গাড়ি গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ঘটনায় ২৩ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি, আরও ২৭ জন জখম হন। তিনটি ঘর ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ বের করার চেষ্টা হয়।
তার আগে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের সোয়াট উপত্যকার একটি থানায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল। ২০০৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ দিন ওই এলাকা সন্ত্রাসবাদীদের দখলে ছিল। সেনা অভিযানে শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় এলাকা। সেখানেই পাকিস্তানের সন্ত্রাস দমন বিভাগের সদর দফতর। বিস্ফোরণের তীব্রতায় সন্ত্রাস দমন বিভাগের সদর দফতরও কেঁপে উঠেছিল।