ইসলামাবাদ : বিদ্যুৎ এমনিতেই মহার্ঘ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এবার পেট্রোল ও ডিজেলের দামও (Petrol and Diesel Prices) অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিল পাকিস্তানে (Pakistan)। আর্থিক দুরবস্থার মধ্যেই এই খবরে আশঙ্কিত পাকিস্তানের মানুষ। পাকিস্তানের কেয়ারটেকার সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনওয়ারুল হক ককরের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার পেট্রোল ও হাইস্পিড ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে লিটারপ্রতি যথাক্রমে ১৪ টাকা ৯১ পয়সা ও ১৮ টাকা ৪৪ পয়সা করে। এই বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানে প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম দাঁড়াল ৩০৫ টাকা ৩৬ পয়সা এবং ডিজেলের দাম বেড়ে দাঁড়াল ৩১১ টাকা ৮৪ পয়সায়।  


সম্প্রতি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে পাকিস্তানে। যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। অনেক জায়গায় সাধারণ মানুষকে বিল পোড়াতে দেখা গেছে। শুধু তা-ই নয়, অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের উপর হামলাও চালানো হয়। যদিও সরকারের তরফে বারবার বলা হচ্ছে, সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা মেলেনি।


চরম আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে পাকিস্তান। সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংস্কারের জেরে মুদ্রাস্ফীতি এবং সুদের হার পৌঁছেছে ঐতিহাসিক স্তরে। যার প্রভাব পড়েছে পাকিস্তানের আমজনতার জীবনে। এই পরিস্থিতিতে সুদের হার বাড়িয়েছে পাকিস্তানের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক। দেশের মুদ্রার অবনয়ন হয়েছে মার্কিন ডলারের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০৫.৬-এ। মঙ্গলবার তা ছিল ৩০৪.৪-এ।


 পাকিস্তানের অর্থনীতির (Pakistan Economy) এই চরম দশা একদিনে হয়নি। একাধিক কারণ রয়েছে এর পিছনে। বিপুল পরিমাণে বিদেশি ঋণের বোঝা রয়েছে পাকিস্তানের উপর। ক্রমাগত পড়ে চলেছে পাকিস্তানের মুদ্রার দাম। পাকিস্তানের বিদেশি তহবিলও এখন তলানিতে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা ফেলেছে শক্তির অপ্রতুলতা (Energy Crisis) এবং ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যা। সব মিলিয়ে নাকানিচোবানি খাচ্ছে পাকিস্তান। 


একদিকে যখন অর্থনীতির এমন দশা। তখনই সেদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রেও নানা সমস্যা চলছে। গত জুন মাসে খাবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বাড়ে- আলু, ময়দা, চা, গম, ডিম এবং চালের। বিপুল দাম বাড়ে বইখাতা, গাড়ির তেল, সব রকমের সাবান, দেশলাইয়ের। বিপুল মূল্যবৃদ্ধি সরাসরি আঘাত হেনেছে দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির উপর। বিক্রিও কমেছে, পড়াশোনাতেও ধাক্কা লেগেছে।


মূল্যবৃদ্ধির সূচকের মাপকাঠিতে গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় (South Asia) সবচেয়ে বেশি মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে পাকিস্তানে। জুনে জানা যায়, কয়েকদিন আগে আর্থিক ভাবে ধসে যাওয়া শ্রীলঙ্কার থেকেও মূল্যবৃদ্ধির হার বেশি পাকিস্তানে।