নয়া দিল্লি: পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা এখনও তলানিতে।  মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে প্রতি মুহূর্তেই চলছে লড়াই। এদিকে আইএমএফ থেকে দশ লক্ষ ডলার ঋণ পেতেই এবার এই কাজ করল পাকিস্তান সরকার। সেখানকার সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই টাকা পেয়ে পাকিস্তান সরকার এই অর্থ সাধারণ জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করছে না বরং পাকিস্তানের ফেডারেল সরকার জাতীয় পরিষদের স্পিকার আয়াজ সাদিক এবং সেনেট চেয়ারম্যানের বেতন ৫ গুণ বৃদ্ধি করেছে।

এআরওয়াই নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শাহবাজ সরকারের এই সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের জনগণ ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বেতন বৃদ্ধি ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে, অর্থাৎ তারা গত ছয় মাসের বকেয়া বেতন পাবেন। বেতন বৃদ্ধির এই পদক্ষেপ "বেতন, ভাতা এবং বিশেষাধিকার আইন ১৯৭৫" সংশোধনের মাধ্যমে করা হয়েছে। যা রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ আকারে বাস্তবায়ন করেছিলেন। 

বছর দুয়েক আগে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের কাছ থেকে সাতশো কোটি ডলারের ঋণের প্যাকেজ পেয়েছিল পাকিস্তান। অতিমারির পরে ডলারের তুলনায় পাকিস্তানি মুদ্রার অবমূল্যায়ন, ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি এবং জ্বালানির অভাবে ধুঁকছিল ইসলামাবাদ। সেই সময় আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের ঋণ পেয়ে খানিক চাঙ্গা হয়েছে পাকিস্তানের অর্থনীতি। কিন্তু তাদের বেশ কিছু শর্তও মানতে হয়েছে। সেই শর্ত পাকিস্তান ঠিকঠাক মেনেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের বোর্ডের বৈঠকে। সম্প্রতি, অপারেশন সিঁদুরে ভারতের কাছে পর্যুদস্ত হওয়ার পর, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে এ ভাবে ঋণ দেওয়া ঠিক হবে কি না, তা পর্যালোচনা করে দেখার আবেদন জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির বক্তব্য, গত তিন দশকে পাকিস্তানকে বহু বার ঋণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। ঋণের অর্থের সদ্ব্যবহার করেনি পাকিস্তান।

তবে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, টাকা হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তানি শাসকদের এই কাজ মোটেও ভালভাবে দেখছে না জনগণ। 

পাকিস্তানে বেতন বৃদ্ধি এমন এক সময়ে করা হয়েছে যখন পাকিস্তান আইএমএফ থেকে একটি বেলআউট প্যাকেজের আশা করছে। দেশে মুদ্রাস্ফীতির হার ৩০% এরও বেশি। সাধারণ মানুষ আটা, বিদ্যুৎ, পেট্রোলের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য লড়াই করছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতে কাটছাঁট করা হচ্ছে। টুইটার, ফেসবুক এবং স্থানীয় মিডিয়াতে এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করা হচ্ছে। বিরোধীরা এটিকে "জনবিরোধী এবং সুবিধাবাদী সিদ্ধান্ত" বলে অভিহিত করেছে।