নয়াদিল্লি: তীব্র দহনে পুড়ছে পড়শি দেশ পাকিস্তান। সেখানে তাপমাত্রা একধাক্কায় ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গিয়েছে। তাপমাত্রার এই বৃদ্ধি গ্রীষ্মকালীন সর্বোচ্চ রেকর্ডই নয় শুধু, দেশের এযাবৎকালীন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছে। এই মুহূর্তে সেই দেশে তাপপ্রবাহও চলছে। সবমিলিয়ে দমবন্ধ হওয়ার জোগাড় পাক নাগরিকদের। (Pakistan Heatwave)


গত কয়েক মাস ধরেই এশিয়ার তাপমাত্রা নিত্য নতুন রেকর্ড গড়ে চলেছে। বিজ্ঞানীরা এই পরিস্থিতিতে মনুষ্যঘটিত জলবায়ু পরিবর্তন বলছেন। এমনকি বেনজির এই পরিস্থিতিতে তাপস্ফীতি বলেও উল্লেখ করছেন বিজ্ঞানীরা। তাপমাত্রার উত্তরোত্তর বৃদ্ধিতে অর্থনীতে যে সঙ্কট নেমে আসছে, তাকেই তাপস্ফীতি বলা হচ্ছে। আর সেই আবহেই পাকিস্তানের পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে। (Pakistan Record Temperature) 


পাকিস্তানের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সোমবার দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের তাপমাত্রা ছিল ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ সালে নির্মিত মহেঞ্জোদারো সভ্যতার যে নিদর্শন রয়েছে সিন্ধু প্রদেশে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানকার তাপমাত্রা ছিল ৫২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  পাকিস্তান আবহাওয়া দফতরে প্রধান শাহিদ আব্বাস জানিয়েছেন, এযাবৎ গ্রীষ্মকালীন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এটাই। পাকিস্তানের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৫৩.৫ এবং ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছনোর নজিরও রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি আবারও সেদিকেই এগোচ্ছে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 


আরও পড়ুন: Papua New Guinea Landslide: মুহূর্তের মধ্যে নিশ্চিহ্ন জনবসতি, পাপুয়া গিনিতে ধসে চাপা প্রায় ৭০০, বাড়তে পারে হতাহত


সিন্ধুর মহোঞ্জোদারো শহরটি একটি ছোট এলাকা। গ্রীষ্মকালে বরাবরই তাপমাত্রা চড়চড় করে বাড়ে সেখানে। শীত সেখানে হালকা, বৃষ্টির পরিমাণও কম। কিন্তু শহর ছোট হলেও, জন সমাগমে কমতি নেই। বেকারি, চায়ের দোকান, গ্যারাজ, ফল, সবজি বাজারে ভিড় লেগেই থাকে সারা বছর। কিন্তু এ বছর তাপমাত্রা যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে শূন্য পড়ে রয়েছে বহু দোকান। রাস্তাঘাটে মানুষজনের দেখা নেই।


২০১৪ সালে পাকিস্তানের তাপমাত্রা ৫৪ ডিগ্রিতে পৌঁছেছিল, যা এযাবৎকালীন সর্বোচ্চ। সেবার বালুচিস্তানের তুরবাতের তাপমাত্রা রেকর্ড গড়ে। এশিয়ার মধ্যে এই ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাই এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ, পৃথিবীর মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ। এই মুহূর্তে তাপপ্রবাহেকর প্রকোপে যুঝছে সিন্ধু প্রদেশ। পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচিতেও তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে। প্রদেশ বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে ভাওয়ালপুর, রহিম ইয়ার খান, ডেরা গাজি খান এবং মুলতানের একাধিক জেলায়। খাইবার পাখতুনখোয়া, গিলগিট-বাল্টিস্তানে ২৮ মে থেকে ১ জুনের মধ্যে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।