ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের পেশোয়ারে ভরা আদালতকক্ষে ঢুকে গুলি করে ধর্মদ্রোহিতা মামলায় বিচারাধীন অভিযুক্তকে খুন করল এক যুবক। খালিদ খান নামে ঘাতক ব্যক্তি কী করে কড়া নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে আদালতে ঢুকল, তা পরিষ্কার হয়নি। তবে তাকে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আটক করা হয়।
পুলিশ অফিসার আজমত খান জানিয়েছেন, তাহির শামিম আহমেদ নামে বিচারাধীন অভিযুক্ত নিজেকে ইসলামের পয়গম্বর বলে ঘোষণা করে, দু বছর আগে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ আচমকা গুলিবিদ্ধ তাহিরের হাসপাতালে পাঠানোর আগেই মৃত্যু হয়।
ধর্মদ্রোহিতা পাকিস্তানে বরাবরই খুব বিতর্কিত, জটিল একটি বিষয়। ধর্মদ্রোহিতায় দোষী সাব্যস্তকে যাবজ্জীবন কারাবাস বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধি আছে বটে, কিন্তু অনেক সময়ই আইন আদালতের তোয়াক্কা না করে মারমুখী জনতাই বিচারকর্তার ভূমিকা হাতে তুলে নিয়ে চটজলদি ফতোয়া দিয়ে অভিযুক্তকে মেরে ফেলে বা তাতে প্ররোচনা দেয়। বিচার বিভাগের মৃত্য়ুদণ্ড দেওয়ার আইনি এক্তিয়ার আছে, তবে স্রেফ কেউ ধর্মদ্রোহিতায় অভিযুক্ত হলেই ধুন্ধুমার হয়ে যায়। ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগকে হাতিয়ার করে ব্যক্তিগত বদলা নেওয়া হয় বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ পাকিস্তানের ঘরোয়া , আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির।
আসিয়া বিবি নামে ধর্মদ্রোহিতায় অভিযুক্ত এক খ্রিস্টান মহিলার পক্ষ নেওয়ায় ২০১১ সালে নিজের দেহরক্ষীর গুলিতে প্রাণ হারান পঞ্জাবের গভর্নর। আসিয়ার মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। দীর্ঘ আট বছর কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত তিনি মামলা থেকে মুক্তি পান। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে জোর আলোড়ন হয়। তবে ছাড়া পাওয়ার পর কট্টরপন্থী মৌলবাদীদের ক্রমাগত প্রাণে মারার হুমকির মুখে গত বছর কানাডায় মেয়েদের কাছে চলে যান আসিয়া।