নয়াদিল্লি: যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে। এখনও কার্যত সম্মুখসমরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। আর সেই আবহেই আফগানিস্তান সীমান্তে বেঘোরে প্রাণ গেল পাক সেনার এক ক্যাপ্টেনের। মারা গিয়েছেন আরও পাঁচ সেনাকর্মী।  সেনার একটি কনভয়ও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। (Pakistan-Afghanistan Border)

Continues below advertisement

বুধবার পাকিস্তানের সেনার জনসংযোগ বিভাগ  এই স্বীকারোক্তি এসেছে। তারা জানিয়েছে, আফগান সীমান্ত সংলগ্ন খাইবার পাখতুনখোয়ার খুররম জেলায় ‘জঙ্গি’দের সঙ্গে সংঘর্ষে ছ’জনের প্রাণ গিয়েছে। গোপন অভিযান চলাকালীন তাঁদের মৃত্য়ু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। (Pakistan-Afghanistan Conflict)

ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে,গোপন সূত্রে খবর পেয়ে খুররম জেলার দোগর এলাকায় সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে নামে পাক সেনা। ওই এলাকায় জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে বলে খবর মিলেছিল। সেখানে পৌঁছতেই দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় শুরু হয়, যাতে সাত জঙ্গিকে নিকেশ করে পাক সেনা। পাক সেনার ছ’জনও প্রাণ হারান, যার মধ্যে এক ক্য়াপ্টেন রয়েছেন। 

Continues below advertisement

আর কোনও জঙ্গি লুকিয় আছে কি না দেখতে, তল্লাশি চলছে ওই অঞ্চলে। পাক সেনার দাবি, ফিতনা আল-খাওয়ারিজ, যা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের অংশ, জঙ্গিরা তার সদস্য ছিল। খুররম জেলা হয়ে প্রায়শই আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করে জঙ্গিরা। পাক সেনার উপর হামলার ঘটনাও ঘটে।

পাক সংবাদমাধ্যন Dawn জানিয়েছে, নিহত ক্যাপ্টেনের নাম নোমান সেলিম। মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে পাক সেনায় যোগ দেন তিনি। বয়স মাত্র ২৪ বছর। পাক সেনা জানিয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে অসীম সাহসের পরিচয় দেন সেলিম। পাঁচ সেনাকর্মীর সঙ্গে শহিদ হয়েছেন তিনি। সেলিম মিয়াঁওয়ালির বাসিন্দা ছিলেন। অন্য পাঁচজনকে, সোয়াবির বাসিন্দা হাবিলদার আমজাদ আলি, রাওয়ালপিণ্ডির নাইক ওয়াকাস আহমেদ, শিকারপুরের সেপাই এজাজ আলি, ঝিলমের সেপাই মহম্মদ ওয়ালিদ এবং খৈরপুরের সেপাই মহম্মদ শাহবাজ নামে শনাক্ত করা গিয়েছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানে শান্তি বজায় রাখতে লাগাতার হিমশিম খেতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। বিশেষ করে ২০২২ সালে তেহরিক-ই-তালিবান তাদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি ভাঙার পর থেকে। চলতি বছরেই খাইবার পাখতুনখোয়ায় ২৯৮ জন নিরীহ মানুষ নাশকতার বলি হয়েছেন। পাশাপাশি, বালুচিস্তানেও লাগাতার বিচ্ছিন্নতাকামী সশস্ত্র সংগঠনগুলি পাক সেনাকে নিশানা করে চলেছে। আস্ত ট্রেন ছিনতাই থেকে সেনার কনভয় ওড়ানোর ঘটনা ঘটছে লাগাতার। সেই আবহে আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালিবান সরকারের সঙ্গেও সংঘাত বেঁধেছে ইসলামাবাদের। পর পর বেশ কয়েকদিন গোলাগুলি বিনিময়ের পর সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি বৈঠক হলেও, তাতে সমাধানসূত্র বেরোয়নি।