নয়াদিল্লি: শহুরে জীবনে মূল্য না থাকলেও, গ্রামে-গঞ্জে আজও পান্তাভাত-তেললঙ্কা জল এনে দেয় চোখে। তীব্র গরমে সুখনিদ্রার অন্যতম ভরসাও  পান্তাভাত। কিন্তু বাঙালির মুখে লেগে থাকা সেই পান্তাভাতের স্বাদে এবার কার্যতই জল ঢেলে দিল খাবারের অনলাইন গাইড Taste Atlas. পান্তাভাতকে পৃথিবীর অন্যতম 'অখাদ্য' খাবার হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা, যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। (Panta Bhat)


পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের খাবার-দাবারের অনলাইন গাইড এই Taste Atlas. সুস্বাদু খাবারের খোঁজ দেওয়া থেকে বনেদি খাবারের খাঁটি রেসিপি, উপাদান, সমালোচনা, সবকিছু একত্রিত করে খাদ্যপ্রেমীদের কাজ সহজ করে তোলাই কাজ ওই সংস্থার। ভারতীয় খাবারও বরাবরই কদর পেয়েছে তাদের কাছে। কিন্তু সম্প্রতি সেরা এবং অখাদ্য ভারতীয় খাবারের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তারা, সেই নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। (Worst Tasted Food)


Taste Atlas-এর 'অখাদ্য' খাবারের তালিকায় একাধিক ভারতীয় পদ জায়গা পেয়েছে। যেমন, জলজিরা, উত্তর ভারতের গজক, দক্ষিণ ভারতের ঠেঙ্গাই সাদম, উত্তর-পূর্ব ভারতের পান্তাভাত, পঞ্জাবের আলু-বেগুন, উত্তরপ্রদেশ-রাজস্থানের ঠান্ডাই, কেরলের আচাপ্পম, হায়দরাবাদের মিরচি কা সালান, তামিলনাড়ুর উপমা এবং মালপোয়া। 




এই তালিকা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। জলজিরা, ঠান্ডাই বা মালপোয়া কী করে অখাদ্য হয় প্রশ্ন উঠছে। তেমনই মধ্যবিত্তের ভরসা তো বটেই, বাঙালির পান্তাভাতকে অখাদ্য বলা হল কোন যুক্তিতে, উঠছে প্রশ্ন। কারণ জলঢালা ভাত, শুকনো লঙ্কা, আলুচোখা বা ফুলুরি সহযোগে খেতেই সুস্বাদু নয় শুধু, এর গুণও রয়েছে অনেক। পান্তাভাত ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম, সোডিয়ামের সমৃদ্ধ। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির ঐতিহ্যের ইতিহাসও। 




মূলত পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা (পাখালা), অসম (পয়তা ভাত), (বাসিয়া ভাত) বিহার এবং ঝাড়খণ্ডেই (বাসিয়া ভাত) পান্তাভাত খাওয়ার চল রয়েছে। দক্ষিণের তামিলনাড়ুতেও পান্তাভাত খাওয়া হয়। সেখানে পান্তাভাতের নাম কঞ্জি। 'মাস্টার শেফ অস্ট্রেলিয়া' অনুষ্ঠানে এই পান্তাভাত খাইয়েই পৃথিবীর তাবড় শেফ-দের মনজয় করে নিয়েছিলেন এক প্রতিযোগী। তাই সেই পান্তাভাতকে অখাদ্য বলায় প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।