নয়াদিল্লি: সংসদে তাণ্ডবের (Parliament Security Breach) ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ললিতকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে সহযোগীদের মোবাইল ফোন পুড়িয়ে দেয় ললিত। রাজস্থানে পুড়িয়ে দেওয়া হয় ফোনগুলি। মোট ৪ জনের ফোন পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করা হয়েছে সূত্র মারফত। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত মনোরঞ্জন ডি, সাগর শর্মা, অমল ধনরাজ শিন্ডে ও নীলম দেবী...এই চারজনেরই ফোন পুড়িয়ে দেয় ললিত। ঘটনার দিন এই ৪ জনেরই ফোন ছিল ললিতের কাছে। নিজের ফোনে ঘটনার ভিডিও করেছিল ললিত। 


সংসদে তাণ্ডবের ঘটনায়, ধৃতদের কল লিস্ট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে দেখছে দিল্লি পুলিশের (Delhi Police Special Cell) স্পেশাল সেল। সূত্রের খবর, হামলার আগে ১৫ দিন ধৃতদের ফোন থেকে ফোন করা হয়েছে এমন ৫০ টি নম্বরের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যাদের নম্বরে ফোন করা হয়েছিল, তাঁদের পরিচয় জানার চেষ্টা করবেন তদন্তকারীরা। সংসদে হানার নেপথ্যে শুধুমাত্র ৬-৭ জনই যুক্ত, না এর বাইরেও অন্য কারও হাত আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 


সংসদে হানার ঘটনায় ৪ জন অভিযুক্তের সাত দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছে পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। ১৫ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হয়েছিল পুলিশের তরফে। মনোরঞ্জন ডি, সাগর শর্মা, অমল ধনরাজ শিন্ডে ও নীলম দেবীকে তদন্তের জন্য মুম্বই, মহীশূর ও লখনউতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন বিচারক। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ইউএপিএ (UAPA act) ধারায় দায়ের করা হয়েছে মামলা। দিল্লি পুলিশের দাবি, লখনউ থেকে বিশেষ জুতো কিনেছিল অভিযুক্তরা। ক্যান কেনা হয়েছিল লখনউ থেকে। পুলিশ সূত্রের দাবি, জেরার সময় একই উত্তর দিচ্ছিল ৪ অভিযুক্তই। 


ক্রমেই আরও জোরালো হচ্ছে সংসদে হানার মাস্টারমাইন্ড ললিতের (Lalit Jha) কলকাতা কানেকশন। বউবাজারের ঘরের পর, এবার বাগুইআটিতে তাঁর আস্তানার হদিশ মিলল। গত ৩ বছর ধরে বাগুইআটির একচিলতে ফ্ল্য়াটে ভাড়া থাকতেন ললিত ঝা। ললিত একা নন, বাগুইআটির এই ফ্ল্যাটে তাঁর সঙ্গে থাকতেন তাঁর ভাই শম্ভু ঝা, বাবা দেব আনন্দ ঝা ও মা মঞ্জুলা দেবী। বাগুইআটিতে সবজিও বিক্রি করত ললিত। ১০ ই ডিসেম্বর ২ মাসের জন্য বিহারে যাচ্ছেন বলে বাড়িওয়ালাকে জানিয়ে যান ললিতের মা, বাবা ও ভাই। ওইদিনই সন্ধেবেলা বাড়িওয়ালার হাতে একটি নারকেল দিয়ে, কয়েকদিনের জন্য দিল্লি যাওয়ার কথা জানায় ললিত। এরপরই ১৩ ডিসেম্বর সংসদে ঘটে স্মোক অ্যাটাকের ঘটনা। গতকালই বাগুইআটির এই ফ্ল্যাটে এসে বাড়িওয়ালাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। 


গত ৩ বছর ধরে বাগুইআটির একচিলতে ফ্ল্যাটে ছিলে। ভাই সোনু ঝা, দেবান্দ ঝা,  মা মঞ্জুলা দেবী। গত ১০ তারিখ। বাবা, মা, ছোট ভাই বিহারে ২ মাসের জন্য যাচ্ছে বলে বেরিয়ে যা। বলে যায় মেজ ছেলে ললিত দেব। সন্ধেবেলা বাড়িওয়ালার হাতে নারকেল দিয়ে বলে দিল্লি যাচ্ছি। 


আরও পড়ুন:  'রেশন দুর্নীতি মামলায় বিস্তারিত তদন্ত প্রয়োজন', রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি ইডির