নয়াদিল্লি: আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে আজও উত্তাল হল সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। আমেরিকায় আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে যে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই নিয়ে আলোচনার দাবি জানান বিরোধী শিবিরের সাংসদরা। পাশাপাশি, যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তও দাবি করা হয়। পাশাপাশি মণিপুর নিয়ে আলোচনার দাবিও তোলেন I.N.D.I.A জোটের সদস্যরা। এর জেরে আজকের মতো সংসদের অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়। (Parliament Winter Session)


লোকসভা এবং রাজ্যসভা, সংসদের দুই কক্ষেই আলোচনা চেয়ে সরব হন বিরোধীরা, তাতে আজকের মতো মুলতবি হয়ে যায় আধিবেশন। বৃহস্পতিবার ফের অধিবেশন শুরু হবে। এ নিয়ে সংসদের বাইরে আজ গর্জে ওঠেন লোকসভার বিরধী দলনেতা রাহুল গাঁধী। তিনি বলেন, "আপনাদের কি মনে হয় আদানি সব অভিযোগ মেনে নেবেন? অবশ্যই উনি অভিযোগ অস্বীকার করবেন। আসল কথা হল, ওঁকে গ্রেফতার করতে হবে। ছোটখাটো মামলায় হাজারো লোককে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমেরিকা ওঁর বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। জেলে পোরা উচিত ওঁকে। আসলে সরকার ওঁকে বাচাচ্ছে।" (Adani Group Bribery Case)


গত সপ্তাহে আমেরিকার নিউইয়র্কের আদালত গৌতম আদানি, তাঁর ভাইপো সাগর আদানি এবং আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনায়, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। ভারতে সৌরপ্রকল্পের বরাত পেতে আদানিরা আমেরিকা থেকে কোটি কোটি টাকা কোলেন। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রচুর তথ্য আড়াল করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে, সেই টাকায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দেয় আদানিরা। তার বিনিময়ে বরাত পেয়ে যায় চড়া দামে সাধারণ মানুষকে বিদ্যুৎ বিক্রির।



আদানি গোষ্ঠী যদিও অভিযোগহ অস্বীকার করেছে। দেশের প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী মুকুল রোহাতগী তাঁদের হয়ে সওয়াল করে জানিয়েছেন, ঘুষ এবং ন্যায় বিচারের পথে বাধা সৃষ্টির যে অভিযোগ, তাতে আদানির নাম নেই। কিন্তু সেই নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দেন কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ। তিনি বলেন, "মোদানি-তন্ত্র চলছে। অভিযোগ অস্বীকারের মাধ্যমে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করছে আদানিরা। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু এই চেষ্টা হাস্যকর, এতে আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ মোটেই ঢাকা দেওয়া যাবে না।"


আদানিদের বিরুদ্ধে এত গুরুতর অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও দেশের তদন্তকারী সংস্থা ED, CBI, SEBI কী করছে, সেই প্রশ্নও তোলেন জয়রাম। তদন্তকারী সংস্থাগুলি দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিক এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা তো দূর, বরং তদন্তকারী সংস্থাগুলি তাঁদের হাতের পুতুল হয়ে উঠছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ইতিহাস ক্ষমা করবে না বলে মত জয়রামের। যদিও বিজেপি পাল্টা আক্রমণ করেছে কংগ্রেসকে। দলের মুখপাত্র টম বরাক্কনের দাবি, জর্জ সোরোসের ইন্ধনে ভারতকে দুর্বল করে দেওয়ার খেলায় নেমেছে কংগ্রেস।