পটনা: নীতীশ কুমারকে দুপাতার চিঠি লিখে জেডি ইউ-এর প্রথম সারির নেতা পবন কে বর্মা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, শিরোমনি অকালি দলের মতো বহু পুরানো শরিক যেখানে রাজি হয়নি, সেখানে দিল্লি বিধানসভা ভোটে দল কেন বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাল! চিঠিটি ট্যুইটারে পোস্ট করেছেন পবন। অতীতে দুজনের একান্ত আলোচনায় যে কথাবার্তা হয়েছিল, তা উদ্ধৃত করে পবনের দাবি, সেখানে বিজেপির জোর সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পবন জানিয়েছেন, তিনি জেডি(ইউ) সংবিধানে বলা লাইন, নীতীশের ব্যক্তিগত অনুভব-অনুভূতি, প্রকাশ্যে দলের কার্যকলাপের সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারছেন না। পবন বলেছেন, আপনি আমাদের বুঝিয়েছেন, রাজনীতি অবশ্যই নীতিনিষ্ঠ হতে হবে, তাতে বিশ্বাসের জোর থাকবে।
৮ ফেব্রুয়ারির দিল্লি বিধানসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে রফামাফিক জেডি (ইউ) দুটি কেন্দ্রে লড়বে। তারপরই পবনের এহেন তীব্র প্রতিক্রিয়া। তিনি জেডিইউয়ের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় মুখপাত্র।


বিহারের বাইরে এই প্রথম কোনও রাজ্যে রফা হল বিজেপি, জেডি (ইউ)-এর। তবে এই রফা তাঁকে ‘গভীর ভাবে বিচলিত’ করেছে, তিনি ‘আদর্শগত স্বচ্ছতা’ চান বলেও জানিয়েছেন বর্মা।
বর্মা সেই গুটিকয়েক জেডিইউ নেতার একজন, যিনি পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম সংখ্যালঘুদের ভারতের নাগরিকত্ব দিতে আনা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন। অন্যজন দলের সহ সভাপতি তথা ভোটের কৌশল রচনায় সিদ্ধহস্ত বলে পরিচিত প্রশান্ত কিশোর।
২০১২ ও তারপর বিজেপি, তার রাজনীতি সম্পর্কে নীতীশের কঠোর মনোভাব স্মরণ করেছেন বর্মা। লিখেছেন, লাইন বদলে আপনি ২০১৭-য় বিজেপির সঙ্গে ফের হাত মেলালেন, কিন্তু বিজেপি সম্পর্কে আপনার ব্যক্তিগত ধারণা বদলায়নি। এখানেই বিভ্রান্তির সূত্রপাত। যেমন, আমার মনে আছে, একান্তে আমার কাছে আপনি স্বীকার করেছিলেন, বর্তমান বিজেপি নেতৃত্ব আপনাকে অপদস্থ করেছে। আপনি বারবার বলেছেন, বিজেপি ভারতকে এক ‘বিপজ্জনক জায়গায়’ নিয়ে যাচ্ছে। আপনার ব্যক্তিগত মত ছিল, আমায় বলেওছিলেন, বিজেপি প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করছে, দেশের ভিতরে গণতান্ত্রিক ও সমাজবাদী শক্তিগুলির জোট বাঁধা প্রয়োজন। একাজের জন্য আপনি দলের এক প্রথম সারির নেতাকে দায়িত্ব পর্যন্ত দিয়েছেন। এসব তাঁর ‘আসল দৃষ্টিভঙ্গি’ হলে কী করে জেডি ইউ বিহারের বাইরে বিজেপির সঙ্গে জোট করল, যেখানে অকালি দলের মতো দীর্ঘকালের পুরানো বন্ধু পর্যন্ত রাজি হয়নি, তিনি বুঝতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেছেন পবন।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) বিরোধী বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে লেখা পত্রে পবন আরও বলেছেন, বিশেষ করে এমন একটা সময়ে এমনটা হচ্ছে যখন বিজেপি সিএএ-এনপিআর-এনআরসি কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যাপক সামাজিক বিভাজনমূলক এজেন্ডা নিয়েছে, দেশের শান্তি, সংহতি, স্থিতিশীলতা নষ্ট করাই যার উদ্দেশ্য।