নয়া দিল্লি : ফের পেগাসাসের ফাঁদ ? ভারতের ৪০ জনের বেশি নামী সাংবাদিকের ফোন নম্বর লিক হওয়ার পর এমনই জল্পনা শুরু হয়েছে। তাছাড়া ফরেনসিক পরীক্ষা নিশ্চিত করেছে যে, কয়েকজনের ক্ষেত্রে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে সফলভাবে নজরদারির চালানো হয়েছে।


লিক হওয়া এই নথিতে রয়েছে- দেশের বড় বড় মিডিয়া হাউসের তাবড় তাবড় সাংবাদিকদের ডেটা। যদিও ওই ডেটায় কোনও ফোন নম্বর থাকা মানে এই নয় যে, সংশ্লিষ্ট ডিভাইসটি পেগাসাসের মাধ্যমে হ্যাক করা হয়েছে বা হ্যাক করার চেষ্টা হয়েছে। তবে পেগাসাস প্রোজেক্ট নিশ্চিত করেছে যে, ওই তালিকা বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে যে নজরদারির সম্ভাবনা রয়েছে। 


এদিকে ১০টি ভারতীয় ফোন যাদের ডেটা সংশ্লিষ্ট লিস্টে ছিল তাদের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রভাবে ডিজিটাল ফরেনসিক অ্যানালিসিস করে দেখা গেছে, হয় সেগুলি পেগাসাস হ্যাক করা হয়েছে বা তার চেষ্টা করা হচ্ছিল।


একটি সংবাদ সংস্থার দুই প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকের নাম ওই লিস্টে রয়েছে। যেমনটা রয়েছে সংস্থার ডিপ্লোম্য়াটিক এডিটর এবং দুই রেগুলার কন্ট্রিবিউটরের নাম। এঁদের মধ্যে একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পুত্র জয় শাহর ব্যাবসা সংক্রান্ত খবর করে গেছেন ব্যাক টু ব্যাক। এছাড়া নিখিল মার্চেন্ট নিয়েও খবর করেছেন। যিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘনিষ্ট ব্যবসায়ী। এছাড়া ওই সাংবাদিক মন্ত্রী পীষূষ গোয়েল ও ব্যবসায়ী অজয় পিরামল নিয়েও তদন্তমূলক রিপোর্টিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।  


কী এই পেগাসাস ? কীভাবেই বা কাজ করে ? 


ইজরায়েলি সংস্থা NSO গ্রুপ এই পেগাসাস স্পাইওয়্যার তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা এটাকে সাইবার অস্ত্র বলে থাকেন। ২০১৬ সালে এটি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। একটি মেসেজ পাওয়ার পর সন্দিহান হয়ে ওঠেন আরবের এক সমাজকর্মী। তার পরই প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, আইফোনকে টার্গেট করছে পেগাসাস। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার বেশ কিছুদিন পর অ্যাপেল iOS-এর আপডেট ভার্সন নিয়ে আসে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে ত্রুটি ছিল তা মেরামত করে ফেলে অ্যাপেল। এর মাধ্যমে ফোন হ্যাক করতে ব্যবহার করা হচ্ছিল পেগাসাসকে।


সম্ভবত এই স্পাইওয়্যার এখনও পর্যন্ত সবথেকে আধুনিক ফোন হ্যাকিং টুল। এর পাশাপাশি এনএসও গ্রুপও পেগাসাসের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। যদিও সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র সরকারকেই এই টুল ব্যবহার করা হয়। এর অপব্যবহারের জন্য সংস্থা দায়ী নয়।