গত সপ্তাহে রাজ্যে এসে বিজেপি নেতাদের ২০০ আসনের টার্গেট বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন অমিত শাহ। বিহার ভোটের ফল ঘোষণার দিন দলের নেতাদের একাংশের কথায় ধরা পড়েছে বাড়তি আত্মবিশ্বাসের সুর। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের অভিমত, বাংলায় মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। ভাল ফলে কর্মীরা উজ্জীবিত হবে। মোদির ম্যাজিক সারা দেশে রয়েছে। উপনির্বাচনেও ভাল ফল। বাংলাতেও চলবে। ২২০ আসনে জিতব।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সামগ্রিকভাবে বলাই যায়, বিহারের ফলাফল একুশের লড়াইয়ের জন্য বিজেপিকে বাড়তি উদ্দীপনা জোগাবে। বিহারের ফল দেখার পর তারা আরও কোমর বেঁধে বাংলা দখলের লড়াইয়ে ঝাঁপাবে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলাটি বিহার সীমানা লাগোয়া। গত লোকসভা ভোটে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ আসনে জিতেছে বিজেপি। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট আসনটিও গিয়েছে বিজেপির দখলে। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বিহার ভোটের ফলের প্রভাব সবথেকে বেশি পড়তে পারে বিহার সীমানা লাগোয়া এই জেলাগুলিতে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমনকল্যাণ লাহিড়ির ব্যাখ্যা, যেহেতু সীমান্তবর্তী এলাকা, সেখানে বিজেপির পক্ষে প্রভাব পড়তে পারে। যারা দোনামনা করছে, তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অনুঘটকের কাজ করবে। কারা যোগ দেবে, তার ওপরও নির্ভর করবে। যদিও তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের দাবি, বাংলায় দাগ কাটতে পারবে না বিজেপি। বিহারের ফলের কোনও প্রভাব পড়বে না, তৃণমূলই জিতবে, ছ’মাস আগে বলে দিলাম।
পর্যবেক্ষকদের অপর অংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির লড়াই কঠিন। বিহারে আরজেডি-কংগ্রেসের জোট থাকলেও মোদি-নীতীশের মতো দুঁদে রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে ময়দানে কার্যত একাই ছিলেন লালুপ্রসাদ যাদবের ছোট ছেলে, ৩১ বছরের তেজস্বী। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির টক্কর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্সের অধ্যাপক সুমন্ত্র বসু বলছেন, ভোটের রেজাল্টে স্পষ্ট তেজস্বীর মতো তরুণ নেতা যদি এত ফাইট দিতে পারে বিজেপিকে, তাহলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা। চার দশকের আন্দোলনের ইতিহাস। আনপ্রেডিক্টেবল মহিলা।
বিহার ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হলেও চোখে পড়ার মতো ভাল ফল করেছে বামেরা। এরাজ্যের বাম-কংগ্রেস নেতারা একুশের লড়াইয়ে জোটের ফল নিয়ে আশাবাদী।
বিহারে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে কী হবে? সেদিকেই আপাতত নজর সকলের।