নয়াদিল্লি: সেনা অফিসার পদে মহিলাদের স্থায়ী নিয়োগের পক্ষে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। এ ব্যাপারে দিল্লি হাইকোর্টের ২০১০-এর নির্দেশ অমান্য করার জন্য তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছে। লিঙ্গ নিয়ে বস্তাপচা মনোভাব নিয়ে কেন্দ্র চলছে বলে তারা মন্তব্য করেছে।

স্থায়ী কমিশনের দাবিতে যে মহিলা অফিসাররা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন, তাঁদের বক্তব্য ছিল, তাঁদের স্থায়ী নিয়োগ না করা অত্যন্ত পশ্চাদমুখী পদক্ষেপ, এর ফলে তাঁদের মর্যাদার অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। তাঁরা আরও বলেন, বর্তমানে সেনা মূলত পুরুষদের সংগঠন। সেনাকর্মীদের যা মানসিকতা, তাতে তাঁরা মহিলা অফিসারদের থেকে নির্দেশ নেওয়ার ব্যাপারে এখনও মানসিকভাবে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেননি। তাঁদের কাজ দেওয়া হচ্ছে শুধু প্রশাসনিক ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত কাজে। কম্যান্ড অ্যাপয়েন্টমেন্ট অর্থাৎ কোনও বিভাগে নেতৃত্ব দেওয়া এবং ক্রাইটেরিয়া অ্যাপয়েন্টমেন্ট অর্থাৎ অন্যান্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার মত কাজও তাঁরা পাচ্ছেন না। নেতৃত্ব ক্ষমতা প্রমাণ করার কোনও জায়গা নেই তাঁদের।

কেন্দ্রীয় সরকার শীর্ষ আদালতে বলেছিল, সেনার বেশিরভাগ কর্মী আসেন গ্রামীণ এলাকা থেকে, মহিলা অফিসারদের থেকে নির্দেশ নেওয়া তাঁদের পক্ষে সহজ নয়। মেয়েদের শারীরিক পরিস্থিতি, পারিবারিক দায়িত্বের মত বহু প্রতিবন্ধক আছে, যা তাঁদের পক্ষে কম্যান্ডিং অফিসার হওয়ার পথে বাধা। জবাবে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, মানসিকতায় যদি পরিবর্তন আনা যায় ও ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করা হয় তো অনেক কিছুই সম্ভব।

তবে মামলা চলাকালীনই গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সেনার ১০টি বিভাগে মহিলা অফিসারদের স্থায়ী কমিশন দেওয়ার আইন আনে কেন্দ্র। এগুলি হল জজ অ্যাডভোকেট কমিশন, আর্মি এডুকেশন কোর, সিগন্যাল, ইঞ্জিনিয়ার, আর্মি অ্যাভিয়েশন, আর্মি এয়ার ডিফেন্স, ইলেকট্রনিক্স-মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্মি সার্ভিস কোর, আর্মি অর্ডিন্যান্স ও ইনটেলিজেন্স। তবে এই বিভাগগুলির কোনওটাই সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার সঙ্গে যুক্ত নয়। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার বক্তব্য, মুখোমুখি যুদ্ধে অংশ নেওয়া ইউনিটে মহিলা কর্মীদের যোগ দেওয়া সম্ভব নয়। দুর্গম এলাকায় যুদ্ধে যোগ দিতে গেলে সর্বোচ্চ স্তরের শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন। প্রত্যক্ষ যুদ্ধে কোনও অফিসার এগিয়ে এসে দলের নেতৃত্ব দেন। যদি কোনও মহিলা যুদ্ধে শত্রু দেশের হাতে বন্দি হন, তাঁর অবস্থা কী হবে।

জবাবে মহিলা অফিসাররা আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা সহ ২২টি দেশের তালিকা দিয়েছেন, যেখানে মহিলারা সরাসরি যুদ্ধে যান।