নয়াদিল্লি: চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং লি-র সঙ্গে টেলিফোনে হওয়া কথোপকথনে সোমবার রাতে লাদাখের গালোয়ান উপত্যকায় চিনের ও ভারতের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় ভারত সরকারের তীব্র প্রতিবাদ, অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেদিন কোনও গোলাগুলি না চললেও দুপক্ষের হাতাহাতি, পাথর ছোঁড়াছুঁড়িতে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান নিহত হয়েছেন। চিনেরও ৪০ জন মারা গিয়েছেন বলে খবর। জয়শঙ্কর কঠোরতম ভাষায় চিনের ভূমিকার নিন্দা করেছেন। টেলিফোনে চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে হওয়া কথোপকথনে গত ৬ জুন দুপক্ষের সিনিয়র সামরিক কম্যান্ডারদের বৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর উত্তেজনা হ্রাস ও বাহিনী প্রত্যাহার নিয়ে যে সমঝোতা, বোঝাপড়া হয়েছিল, তা স্মরণ করেন তিনি।
বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, একেবারে নীচের স্তরের কমান্ডাররা গত সপ্তাহে এই বোঝাপড়া কার্যকর করতে নিয়মিত বৈঠক করেছেন। এতে খানিকটা অগ্রগতিও হয়েছিল। কিন্তু চিনের তরফে এলএসি-তে আমাদের দিকে গালোয়ান উপত্যকায় একটি কাঠামো তৈরির চেষ্টা হয়। এটাই হয়ে ওঠে সাম্প্রতিক বিতর্ক, বিরোধের মূল উত্স। চিন একেবারে পূর্বপরিকল্পনামাফিক ছক কষে পদক্ষেপ করে, যার জেরে সাম্প্রতিক হিংসা এবং প্রাণহানি ঘটেছে। স্থিতাবস্থা নষ্ট করা চলবে না বলে আমাদের মধ্যে হওয়া যাবতীয় চুক্তি, বোঝাপড়া ভেঙে বাস্তবকে বদলানোর মানসিকতাই প্রতিফলিত হয়েছে এতে।
জয়শঙ্কর জানিয়ে দিয়েছেন, এমন অভূতপূর্ব ঘটনাবলী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। চিনের উচিত, তাদের নিজেদের আচরণ নতুন করে খতিয়ে দেখে ভুল শুধরে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া। এটাই বর্তমান সময়ে দরকার। ৬ জুন সিনিয়র কমান্ডারদের মধ্যে হওয়া বোঝাপড়া দুদেশের আন্তরিকতার সঙ্গে অক্ষরে অক্ষরে কার্য্যকর করা উচিত। দুপক্ষের সেনাবাহিনীরই উচিত সব দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, প্রটোকল মেনে চলা। তাদের এলএসিকে পূর্ণ সম্মান জানিয়ে তাকে বদলাতে একতরফা কোনও পদক্ষেপ করাও উচিত নয়।
বৈঠক শেষে জয়শঙ্কর ও লি একমত হয়েছেন যে, দুদেশই ৬ জুন হওয়া বোঝাপড়া অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলবে, এমন কিছু করবে না যাতে উত্তেজনা বেড়ে যায়, বরং দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া, চুক্তি মতো শান্তি, স্থিতাবস্থা বজায় রাখাই সুনিশ্চিত করবে।