কলকাতা : বিজ্ঞাপনের কপিকে নিয়ে গিয়েগিয়েছিলেন শিল্পের পর্যায়ে। তাঁর লেখা এক-একটা ক্যাচলাইন দশকের পর দশক ধরে জড়িয়ে গিয়েছে প্রোডাক্টের আইডেন্টিটির সঙ্গে। বিজ্ঞাপন দুনিয়ার তিনি শুধু পথিকৃৎ নন, তিনি অপ্রতিম। ভারতের বিজ্ঞাপন দুনিয়াকে ভাবতে শিখিয়ে ছিলেন অন্যভাবে। তাঁর ভাবনা, ক্যাচলাইনের বহুই কালোত্তীর্ণ। জায়গা করে নিয়েছে মানুষের মনের মণিকোঠায়। তিনি পীযূষ পাণ্ডে। বেশ কিছুদিন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অ্যাডম্যান পীযূষ পাণ্ডে। বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
পীযূষ পাণ্ডে প্রায় চার দশক ধরে বিজ্ঞাপন জগতে কাজ করে করেছেন । ওগিলভির চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁরই ব্রেনচাইন্ড ক্যাডবেরির 'কুছ খাস হ্যায়'..। তাঁর শৈল্পিক কলমেই তৈরি হয়েছে ফেভিকল, ক্যাডবেরি এবং এশিয়ান পেইন্টসের আইকনিক বিজ্ঞাপনের স্ক্রিপ্টগুলি। এছাড়াও , লুনা মোপেড, ফরচুন অয়েল এবং আরও বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের জন্য উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞাপন তৈরি করেছেন তিনি। ফেভিকলের ‘ইয়ে ফেভিকল কা মজবুত জোড়’, কিংবা ক্যাডেবেরির ‘কুছ খাস হ্যায়’, আবার এশিয়ান পেন্টসের ‘হর খুশি মে রং লায়’— পীযূষের তৈরি বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের কথাগুলি যেন বিপণনের থেকে অতিরিক্ত কিছু। প্রোডাক্টের ইমেজকে মানুষের মনে জায়গা করে দিয়েছে পীযূষের লেখা ক্যাচলাইন। বিজ্ঞাপন জগতের মানুষদের একাংশের মতে, তাঁর দেখানো পথে হেঁটেই সাবালক হয়েছে ভারতের বিজ্ঞাপন জগৎ। পেয়েছিলেন পদ্মশ্রী সম্মানও।
২০১৩ সালে জন আব্রাহাম অভিনীত "মাদ্রাজ ক্যাফে"তে অভিনয় করেন তিনি। তাছাড়াও আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের একটি বিপণন প্রচারণা এবং ম্যাজিক পেন্সিল প্রজেক্ট ভিডিওতে অভিনয়ও করেন তিনি। শুধু অভিনয়ই নয়, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী পীযূষ পাণ্ডের লেখা 'মিলে সুর মেরা তুমহারা' ৮০ ও ৯০ দশকের শিশুদের মনের মণিকোঠায় গচ্ছিত।
বিজ্ঞাপন জগতের অন্যতম কাণ্ডারী পীযূষ পাণ্ডের মৃত্যুতে শোকে মূহ্যমান বিজ্ঞাপন জগৎ। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ।