নয়াদিল্লি: ফিটনেস হল শূন্য বিনিয়োগে ১০০ শতাংশ রিটার্ন লাভ-- দেশবাসীকে স্বাস্থ্য সচেতন করতে ফিট ইন্ডিয়া কর্মসূচির উদ্বোধন করে এই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার, এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফিট ইন্ডিয়া কর্মসূচি পালিত হয়। সেখানে দেশীয় মার্শাল আর্টের বিভিন্ন কৌশল এবং নৃত্য ও ক্রীড়া প্রদর্শিত হয়। মোদি জানান, প্রযুক্তির ফলে জীবনে শারীরিক পরিশ্রম কমে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিটনেস চিরকাল আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ ছিল। কিন্তু এখন ফিটনেস নিয়ে অনীহা রয়েছে। কয়েক দশক আগে, একজন স্বাভাবিক ব্যক্তি দিনে ৮-১০ কিলোমিটার হাঁটতেন বা দৌড়তেন অথবা সাইক্লিং করতেন। কিন্তু, প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে সেই শারীরিক সক্রিয়তা কমে গিয়েছে। আমরা আজ কম হাঁটি। আর সেই প্রযুক্তিই আমাদের তথ্য দিয়ে জানায়, আমরা যথেষ্ট পরিমাণে হাঁটছি না।
ফিট ইন্ডিয়া কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য হল শারীরিক কসরৎ ও ক্রীড়াকে দৈনিক জীবনে যুক্ত করতে মানুষকে উৎসাহিত করা। মোদি বলেন, ফিটনেস কোনও শব্দ নয়। সুস্থ ও সম্পূর্ণ জীবনযাপনের এটি একটি পূর্বশর্ত। এটা একটা বিপ্লব। অন্তত হওয়া উচিত। ফিট ইন্ডিয়া কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে মাথায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু। এছাড়া রয়েছেন সরকারি আধিকারিক, ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থা, বিভিন্ন জাতীয় ক্রীড়া সংস্থা, বেসরকারি সংস্থা ও ফিটনেস প্রসার ঘটানো বিভিন্ন সংগঠন।
বর্তমান যুব-সমাজের স্বাস্থ্য সচেতনহীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মোদি। বলেন, এখন ডায়াবেটিস, হাইপারটেনসন সহ বিভিন্ন রোগ যেগুলি জীবনযাত্রা সম্পর্কিত, সেগুলির বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। এখন এমন শোনা যায়, যে ১২-১৫ বছর বয়সীরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আবার ৩০ বছরে হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। এই ধারা উদ্বেগজনক। তবে, জীবনধারা পরিবর্তন করে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। মোদি বলেন, ফিটনেস হল এই সময়ের চাহিদা। কিন্তু, প্রযুক্তির সঙ্গে শারীরিক সক্ষমতা কমে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, আমরা এখন ক’পা ফেললাম, তা মোবাইল অ্যাপে গুণে দেখি। এখন ফিটনেস চর্চার চেয়ে সেই নিয়ে কথা বলাটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেণ রিজিজুও। তিনি জানান, দেশের সার্বিক উন্নয়নে ফিটনেস জরুরি। প্রতিটি ভারতীয়কে সচেতন করাই এই কর্মসূচির লক্ষ্য। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এই কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী। বলেন, হকির জাদুকর মেজর ধ্যানচাঁদের জন্মবার্ষিকীর দিন এই কর্মসূচির উদ্বোধন হওয়াটাও ইতিবাচক। এদিন জাতীয় ক্রীড়া সম্মান বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান মোদি। বলেন, আমাদের আশা-আকাঙ্খাকে নতুন জীবনদান করেন ক্রীড়াবিদরা। পদক স্রেফ তাঁদের মেহনতের ফসল নয়, এটা নতুন ভারতের প্রত্যয়ও। প্রধানমন্ত্রীর মতে, জীবনযাত্রার এই সমস্যা শুধুমাত্র ভারত নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই সমস্যার মোকাবিলা করতে এধরনের কর্মসূচিকে মান্যতা দিয়েছে। মোদি বলেন, শরীর ফিট তো মন ফিট।