নিউ দিল্লি : দেশে রোজই লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। করোনা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের ভূমিকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কংগ্রেস সহ অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল। এবার সমালোচনা এল বাইরে থেকে। আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যানসেট-এ প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলা হয়েছে, "করোনা নিয়ন্ত্রণে নিজেদের প্রাথমিক সাফল্য "তছনছ" করে দিয়েছে ভারত। এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে সমালোচনা ও খোলামেলা আলোচনাকে মোদির শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্টা 'ক্ষমার অযোগ্য'।"


দ্য ল্যানসেট লিখেছে, "করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিকভাবে ভারত যে সাফল্য পেয়েছিল তা "তছনছ" করে দিয়েছে। এপ্রিলের আগে পর্যন্ত সরকারের COVID-19 টাস্কফোর্স মাসাধিক সময় আলোচনায় বসেনি। আর তার ফল আমাদের সামনে। এই পরিস্থিতিতে যখন সংকট বাড়ছে, তখন বিষয়টির পুনর্গঠন করতে হবে ভারতকে। এর সাফল্য নির্ভর করবে সরকার নিজেদের ভুল কতটা শুধরে নিচ্ছে তার উপর। দায়িত্বশীল নেতৃত্ব, স্বচ্ছতা এবং জনস্বাস্থ্যের মধ্যে একটা বিজ্ঞান আছে।"


শুধু তাই নয়, কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দ্য ল্যানসেট বলেছে, বেশ কয়েক মাস সংক্রমণের হার কমতে থাকায় ভারত করোনা ভাইরাসকে পরাস্ত করে ফেলেছে, এরকম একটা বার্তা দিতে থাকে। যদিও তার আগে বারবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এবং নতুন স্ট্রেন নিয়ে সতর্ক বার্তা দেওয়া হচ্ছিল। 


সমালোচনা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনেরও। ল্যানসেট লিখেছে, " মার্চের গোড়ার দিকে দ্বিতীয় ঢেউ আসার আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ঘোষণা করেন, ভারতে মহামারীর "খেলা শেষ"।


করোনা পরিস্থিতিতে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে যেভাবে সামাজিক দূরত্ব-বিধি লঙ্ঘন হয়েছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালতও। সেই প্রসঙ্গই উঠে এসেছে ল্যানসেটের প্রতিবেদনে। জার্নালে লেখা হয়েছে, "সতর্কবার্তা সত্ত্বেও সরকার ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়েছে। তাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লক্ষ লক্ষ মানুষ জমায়েত করেছেন। এর পাশাপাশি চলেছে বড় বড় রাজনৈতিক সভা। কখনও কখনও মনে হয়েছে, মহামারী নিয়ন্ত্রণের থেকে টুইটারে সমালোচনা সরানোয় মোদি সরকারের লক্ষ্য।" 


প্রসঙ্গত, দেশে একদিনে সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে শনিবারই। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমিত হয়েছেন ৪ লক্ষর বেশি।