নয়াদিল্লি : মার্কিন মুলুক থেকে তোলা টাকায় ভারতের একাধিক রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত হাসিল করার অভিযোগ উঠেছে আদানি এবং তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে। ২১০০ কোটি টাকার বেশি ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই আদানি-গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। আমেরিকার FCPA আইনেই আদানিদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হয় । মার্কিন বিচার বিভাগ এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন নিউ ইয়র্ক ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে গৌতম আদানি, তাঁর ভাইপো সাগর আদানি এবং আদানি গ্রীন এনার্জির (AGEL) মুখ্য আধিকারিক বিনীত জৈনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়। কিন্তু ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে দায়িত্ব নেওয়ার পরই বদলেছে ছবিটা। মোদির আমেরিকা সফরের ঠিক দু-দিন আগেই ইউএসএ–র ঘুষ তদন্ত আইন কার্যকর করা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এই আবহেই বুধবার মুখোমুখি হন মোদি ও ট্রাম্প।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে তাঁরা সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে আদানি নিয়ে? প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তার উত্তরে মোদি বলেন,ওটা ব্যক্তিগত বিষয়। আমেরিকায় আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কোনও কথা হয়েছে কিনা এই প্রশ্নের জবাবে নরেন্দ্র মোদি বলেন, এরকম ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে দু'দেশের রাষ্ট্রনেতা না দেখা করেন, না আলোচনায় বসেন, না কথা বলেন।
মোদির এই প্রতিক্রিয়া শুনে সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ করেছেন রাহুল গান্ধী। 'দেশে প্রশ্ন করলে মুখে কুলুপ আর বিদেশে জিজ্ঞাসা করলে ব্যক্তিগত বিষয়! আমেরিকাতেও আদানির দুর্নীতিতে পর্দা টানলেন প্রধানমন্ত্রী।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম ওয়াশিংটনে সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কী প্রভাব ভারতের উপর পড়বে, তা নিয়ে জল্পনার আবহে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠক হয়। হোয়াইট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী জানান, দু'দেশের মধ্যে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জ্বালানির ব্যবসা আরও মজবুত হবে। পরমাণু ও পরিকাঠামোক্ষেত্রে বাড়বে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা। ভারত-আমেরিকার মধ্যে প্রযুক্তি বিনিময় নিয়েও ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।